অণুজীববিদ্যা

- সাধারণ বিজ্ঞান জীব বিজ্ঞান | - | NCTB BOOK

অনুজীববিদ্যা

Microbiology

অনুজীব

অনুজীব বা জীবাণু বলতে সূক্ষ্মজীব বঝায়। মাটি, পানি, বায়ু এবং পরিবেশে এমন অনেক জীব রয়েছে যেগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। কেবলমাত্র অণুবীক্ষণ যন্তের সাহায্যে এদের অস্তিত্ব বোঝা যায়। এ সব জীবকেই অনুজীব বলা হয়। ভাইরাস, রিকেটসিয়া, ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি অনুজীবের অন্তর্ভুক্ত। এদের বেশির ভাগই পরজীবী এবং পোষক দেহ রোগ সৃষ্টি করে। যেসব জীবাণু রোগ সৃষ্টি করে তাদের প্যাথোজেনিক (Pathogenic) বলা হয়। প্রাণীদেহে জীবাণুজাত বিষ নিষ্ক্রিয়কারী রাসায়নিক পদার্থের নাম অ্যান্টিবডি।

 

এক নজরে বিভিন্ন অনুজীবের তুলনামূলক চিত্র

common.content_added_by

অণুজীব

 

অনুজীব

অনুজীব বা জীবাণু বলতে সূক্ষ্মজীব বঝায়। মাটি, পানি, বায়ু এবং পরিবেশে এমন অনেক জীব রয়েছে যেগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। কেবলমাত্র অণুবীক্ষণ যন্তের সাহায্যে এদের অস্তিত্ব বোঝা যায়। এ সব জীবকেই অনুজীব বলা হয়। ভাইরাস, রিকেটসিয়া, ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি অনুজীবের অন্তর্ভুক্ত। এদের বেশির ভাগই পরজীবী এবং পোষক দেহ রোগ সৃষ্টি করে। যেসব জীবাণু রোগ সৃষ্টি করে তাদের প্যাথোজেনিক (Pathogenic) বলা হয়। প্রাণীদেহে জীবাণুজাত বিষ নিষ্ক্রিয়কারী রাসায়নিক পদার্থের নাম অ্যান্টিবডি।

 

 

 

common.content_added_by

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

ছত্রাক
শৈবাল
ফার্ন
ব্যাকটেরিয়া

ভাইরাস

ভাইরাস (Virus)

ভাইরাস

ভাইরাস একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ বিষ। ভাইরাস হল এক প্রকার অতিক্ষুদ্র অণুজীব যারা শুধুমাত্র জীবিত কোষের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ভাইরাস অকোষীয়। দেহ কোষপ্রাচীর, সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়া্‌, ‌মাইটোকনড্রিয়া এবং রাইবোজোম অনুপস্থিত। কেবল প্রোটিন এবং নিউক্লিক এসিড (DNA/RNA) দিয়ে ভাইরাসের দেহ গঠিত। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে চিলিতে F.C. Bawden, N.W. Pirie এবং Bernal টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (TMV) হতে প্রোটিন এবং নিউক্লিক এসিড সমন্বয়ে এক প্রকার তরল পদার্থ উৎপন্ন করতে সক্ষম হন। পোষক দেহের বাহিরে ভাইরাস জড় পদার্থের ন্যায় আচরণ করে। জীব ও জড়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী হল ভাইরাস। যে সকল ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে, তাদেরকে বলা হয় ব্যাকটেরিওফাজ।

 

common.content_added_by

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অ্যানোফিলিস মশা
এডিস মশা
কিউলেক্স মশা
কোনটি নয়

ভাইরাসঘটিত রোগ

ভাইরাসঘটিত রোগ

ক) উদ্ভিদের দেহে রোগ

ভাইরাস তামাকের মোজাইক রোগ, ধানের টুংগ্রো রোগের জন্য দায়ী।

 

খ) প্রাণীদেহে রোগগুটি বসন্ত (Small Pox)

বসন্ত দুই ধরনের। যথা- গুতি বসন্ত এবং জলবসন্ত। আজ থেকে ৬০, ৭০ বছর আগেও যখন কোন গ্রামে গুটি বসন্ত দেখা দিতো, তা ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করত, মহামারী আকারে মৃত্যুর কারন ঘটাতো হাজার হাজার মানুষের। ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড অ্যান্থনি জেনার গুটি বসন্তের টিকা (Vaccine) আবিষ্কার করেন। জেনারকে ‘প্রতিষেধক বিদ্যার জনক’ বলা হয়। ১৯৬৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সারা বিশ্বে গুটিবসন্ত নির্মূলের প্রচারণা চালায় এবং সফলভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত করে। ফলে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে গুটিবসন্ত নির্মূল করা সম্ভব হয়।

 জলাতঙ্ক (Rabies)

জলাতঙ্ক (Hydrophobia) মূলত একটি ভাইরাসজনিত মরণব্যাধি। এর ইংরেজি নাম রাবিস। এটি সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু যেমন – কুকুর, নেকড়ে বাঘ, খেকশিয়াল, বেজি, বিড়াল, বাদুড়, বানর প্রভৃতি এবং মানুষের রোগ। এই ভাইরাসটি যখন কোন কুকুর বা ক্যানিস গোত্রের প্রাণীর মধ্যে প্রবেশ করে তখন প্রাণীর কিছুদিনের মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে অর্থাৎ পাগল হয়ে যায়। আক্রান্ত প্রাণীর কামড়ে বা আঁচড়ে মানুষ ও গবাদি পশুতে রোগ সংক্রমিত হয়। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই এবং রোগীর মৃত্যু অনিবার্য (১০০%)। ১৯৮৫ সালে লুইপাস্তুর নামে একজন ফরাসি বিজ্ঞানী জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন।

 নিপাহ (Nipah)

নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশের সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এই সময়টাতেই খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয় বাদুর গাছে বাঁধা হাড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা মিশে যায়। সেই বাদুর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং সেই রস খেলে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস। এই রোগ মস্তিষ্কে প্রচন্ড প্রদাহ হয়। এখন পর্যন্ত এ রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। ঠিকমতো শুশ্রুষা হলেই রোগী বেঁচে যেতে পারে।

 এইডস (AIDS)

মানবদেহে HIV (Human Immunodeficiency Virus) এর আক্রমণে এইডস (AIDS = Acquired Immune Deficiency Syndrome) রোগ হয়। এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের শ্বেতকণিকা ধ্বংস হয়। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity) লোপ পায়। HIV সংক্রমনের সর্বশেষ পর্যায় হলো এইডস। মানবদেহে ভাইরাস প্রবেশ করার ৬ মাস থেকে ১০ বছরের মধ্যে শরীরে এইডস এর লক্ষণ প্রকাশ পায়। এইডস রোগের কোন নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই। পেনিসিলিন বা অন্য কোন এন্টিবায়োটিক দ্বারা AIDS রোগ সরানো সম্ভব নয় অর্থাৎ ১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের প্রথম এইডস রোগের সন্ধান পাওয়া যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি এইডস আক্রান্ত রোগী আছে। এইডস এর এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা নেই। ফলে এইডস এর পরিমাণ নিশ্চিত মৃত্যু। AIDS রোগীর সাধারণ স্পর্শের দ্বারা এ রোগ ছড়ায় না। রক্ত সঞ্চালন যৌন-সংক্রমণ এর মাধ্যমে এ রোগ সংক্রমিত হয়। গর্ভবতী মহিলা এ রোগে আক্রান্ত হলে তার সন্তানের মধ্যে এ রোগ হতে পারে। স্তন দুগ্ধ পানের মাধ্যমে আক্রান্ত মহিলার দেহ থেকে শিশুর AIDS হতে পারে। অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা এইডস সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এইডস প্রতিরোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা। জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে পালিত হয়।

 পোলিও (Polio)

পোলিও মাইলিটিস (Poliomyelitis) এক ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ রোগ। সচরাচর এটি পোলিও নামেই সর্বাধিক পরিচিত। দূষিত খাদ্য ও পানির সাথে প্রবেশ করার পর পোলিও ভাইরাস মানব দেহের স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করে এবং মাংসপেশি নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুকোষকে আক্রান্ত করে। এর ফলে ব্যক্তির শরীর পক্ষাঘাতে (Paralysis) আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত স্থানটি সাধারণত পা হয়ে থাকে। ১৯৫৪ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী জোনাস পোলিও রোগের টিকা (Inactivated vaccine) আবিষ্কার করেন। ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের La Jolla শহরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৬১ সালে আলবার্ট সাবিল মুখে খাওয়ার উপযোগী ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন (Oral Polio vaccine- OPV) আবিষ্কার করেন।

 ইবোলা ভাইরাস (Ebola Virus)

মধ্য আফ্রিকার উত্তরাংশে কঙ্গো উপত্যকায় প্রবাহিত ইবোলা নদীর নামানুসারে ইবোলা ভাইরাসের নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৭৬ সালে কঙ্গোতে সর্বপ্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। ইবোলা ভাইরাসের লক্ষণ জ্বর, গলাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং মাথা ধরা। ইবোলা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ লাইবেরিয়া।

 জিকা জ্বর

গবেষকরা জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত করেন ১৯৪৭ সালে। উগান্ডার একটি বনের নাম জিকা। সে বনের বানর থেকে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয় বলে গবেষকরা নাম দিয়েছইলেন জিকা ভাইরাস। মানবদেহে ভাইরাসটির প্রথমবারের মতো সনাক্ত করা হয় ১৯৫২ সালে সেটা উগান্ডাতে। ২০১৫-১৬ সালে ভাইরাসটি আমেরিকা মহাদেশে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে ব্রাজিলের মহামারীর সূচনা হয়।

 

common.content_added_by

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

ঘুম না হওয়া
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া
হাড় ক্ষয় যাওয়া
রাতকানা

ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)

ব্যাকটেরিয়া অসবুজ, এককোষী অণুবীক্ষণিক জীব। নিউক্লিয়াস আদি প্রকৃতির (Prokaryotic) অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন, নিউক্লিওলাস অনুপস্থিত। সিউডো নিউক্লিয়াসে ক্রোমোসোম থাকে, যদিও এটি তেমন সুগঠিত নয়। এতে হিস্টোন প্রোটিন থাকে না। জলে-স্থলে বাতাসের সর্বত্র অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া আছে। আমাদের অস্ত্র Escherichia coli ব্যাকটেরিয়া থাকে।

যে সকল ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতি ছাড়া বাঁচতে পারে না, তাদের অ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়া বলে। যে সকল ব্যাকটেরিয়া বায়ুর উপস্থিত ছাড়া বাঁচ থাকতে পারে, তাদের অ্যানারোবিক ব্যাকটেরিয়া বলে।

 

common.content_added_by

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

রবার্ট কুক
লিউয়েন হুক
রবার্ট হুক
এডওয়ার্ড ডোনার
ব্যাকটেরিয়া
ভাইরাস
ছত্রাক
পরগাছা

ব্যাক্টেরিয়ার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

ব্যাকটেরিয়ার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

ক) উপকারিতা

১) ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ পচিয়ে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। যেমন নাইট্রোব্যাক্টর (Nitrobactor)। এ ছাড়া মাটিতে বসবাসকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া বাতাস থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে মাটি উর্বর হয়। যেমন- অ্যাযোটোব্যাক্টর (Azotobactor), ক্লসট্রিডিয়াম (Clostridium)। শিম (Bean) জাতীয় উদ্ভিদের শিকড়ে এক ধরনের গুটলি দেখা যায়, যার ভিতরে রাইযোবিয়াম (Rhizobium) জাতীয় ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা বাতাসের নাইট্রোজেনকে নাইট্রেট সারে রূপান্তরিত করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।

 

 

common.content_added_by

প্রোটোজোয়া

common.please_contribute_to_add_content_into প্রোটোজোয়া.
Content

সংক্রামক রোগ

সংক্রমণ রোগ (Infectious Diseases)

ক) খাদ্য ও পানিবাহিত: আমাশয় কলেরা, টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, পোলিও, হেপাটাইটিস-এ, হেপাটাইটিস-ই প্রভৃতি।

খ) বায়ুবাহিত: হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জা, গুটিবসন্ত, জলবসন্ত, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিস, মাম্পস, সার্স প্রভৃতি।

গ) ছোঁয়াচে: স্ক্যাবিস, কুষ্ঠ, হার্পিস প্রভৃতি।

ঘ) যৌন সংস্পর্শ: এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, গনোরিয়া, সিফিলিস প্রভৃতি।

ঙ) রক্ত: এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি প্রভৃতি।

চ) পতঙ্গবাহিত: যে সকল পতঙ্গ অন্য একটি জীবের দেহের জীবাণু সংক্রমণ ঘটায় তাদেরকে ভেক্টর বলে। যেমন-মশা-মাছি উকুন প্রভৃতি।

 

common.content_added_by

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

এইডস

ডায়াবেটিস

উচ্চরক্তচাপ

ক্রনিক রেনাল ফেইলিউর

যক্ষ্মা
নিউমোনিয়া
উচ্চ রক্তচাপ
আমাশয়
এইডস
উচ্চ রক্তচাপ
ডায়াবেটিস
রেনাল ফিইলিউর

জীবাণুমুক্তকরণ

common.please_contribute_to_add_content_into জীবাণুমুক্তকরণ.
Content
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion