ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট (২.৫)

এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-১ প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | - | NCTB BOOK

এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ইলেকট্রিক সার্কিট, খোলা সার্কিট, সিরিজ সার্কিট, প্যারালাল সার্কিট, মিশ্র সার্কিট, টেস্ট বোর্ড সম্পর্কে জানতে পারব।

common.content_added_by

ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট (২.৫.১)

২.৫.১ ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট

যে পথের/যার মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে তাকে সার্কিট বা বর্তনী বলে । আবার বলতে পারি কারেন্ট চলাচলের সম্পূর্ণ পথকেই সার্কিট বা বর্তনী বলে । অর্থাৎ যে পথ দিয়ে সহজে বিদ্যুৎ চলাচল করে লোডের মধ্য দিয়ে কার্য সমাধান করে অন্য একটি পথ দিয়ে ফিরে আসতে পারে তাকে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট বা বৈদ্যুতিক বর্তনী বলে ।

ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের প্রকারভেদ

ক) Open Circuit - খোলা বর্তনী 

খ) Closed Circuit - আবদ্ধ বর্তনী

 গ) Short Circuit - সংক্ষিপ্ত বর্তনী

সংযোগের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে - 

১। সিরিজ সার্কিট
২। প্যারালাল সার্কিট
৩। মিশ্র সার্কিট

ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের উপাদানগুলোর প্রয়োজনীয়তা

একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের প্রধান উপাদান পাঁচটি-
১। বিদ্যুৎ এর উৎস (Source): যেমন- ব্যাটারী, জেনারেটর
২। পরিবাহী (Conductor): যেমন - তার বা ক্যাবল
৩। নিয়ন্ত্রন যন্ত্র (Controlling Device): যেমন – সুইচ
৪। ব্যবহার যন্ত্র (Load): যেমন- বাতি, পাখা, মোটর ইত্যাদি। 

৫। রক্ষণ যন্ত্র (Protective Device): যেমন - ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার।

এই পাঁচটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান ছাড়া কোন বর্তনীকে আদর্শ সার্কিট বলা যাবে না। কেননা ইলেকটিক্যাল সার্কিট হতে হলে অবশ্যই একটি বৈদ্যুতিক উৎস প্রয়োজন। একই ভাবে বৈদ্যুতিক উৎস হতে বিদ্যুৎ কে পরিবহন করার জন্য কন্ডাক্টর (Conductor)বা পরিবাহী প্রয়োজন। এরপর বিদ্যুৎ প্রবাহকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য নিয়ন্ত্রনকারী যন্ত্রের প্রয়োজন। লোড ছাড়া কোন সার্কিট পরিপূর্ণ হয় না। সেজন্য বৈদ্যুতিক সার্কিটে লোড আবশ্যক। এরপর সম্পূর্ণ সার্কিটকে রক্ষা করার জন্য রক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন। তাই একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের মূল উপাদান পাঁচটি।

 

common.content_added_by

খোলা বর্তনী (২.৫.২)

২.৫.২ খোলা বর্তনী (Open Circuit)

কোন উৎস হতে কারেন্ট প্রবাহ শুরু হয়ে যে কোন স্থানে বিচ্ছিন্ন অথবা খোলা থাকলে তাকে ওপেন সার্কিট বলা হয়। অর্থাৎ ওপেন সার্কিট অবস্থায় কারেন্ট প্রবাহ সম্পন্ন হতে পারে না। সার্কিট এর সুইচ অফ অবস্থায় কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না, এমন সার্কিটকে ওপেন সার্কিট বা খোলা বর্তনী বলে। সুইচ অন অবস্থায় থাকলেও কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না। কারণ সার্কিটের যে কোন স্থান খোলা বা কাটা থাকতে পারে।

চিত্র ২.১০ : খোলা বর্তনী বা Open Circuit

আৰ ৰক্ষনী (Closed Circuit)

কোন উৎস থেকে কারেন্ট প্রবাহ শুরু হয়ে পুনরায় উষ্ণ উৎসে ফিরে আসলে তাকে বন্ধ সার্কিট বলে। অর্থাৎ এক প্রাপ্ত দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়ে অপর প্রান্ত দিয়ে ফিরে আসতে পারে এমন সার্কিটকে বোঝায় ।

চিত্র ২.১১: আবদ্ধ বর্তনী বা Closed Circuit

সংক্ষিপ্ত বর্তনী (Short Clrcuit)

কোন সার্কিটের দুই ভার অর্থাৎ ফেজ তার ও নিউট্রাল তার অথবা ফেজ তার ও আর্থিং তার যদি একত্রিত হয়ে যায় তখন শর্ট-সার্কিট ঘটে। এর ফলে সার্কিট এবং লোডের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

 

common.content_added_by

সিরিজ সার্কিট (২.৫.৩)

২.৫.৩ সিরিজ সার্কিট (Series Circuit)

যখন কতগুলো রেজিস্টর বা লোভ এমনভাবে সংযোগ করা হয় যাতে এদের একটির শেষ প্রান্ত অপরটির প্রথম প্রান্তের সাথে সংযোজিত হয় এবং বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ করলে কারেন্ট প্রবাহের একটি মাত্র পথ থাকে তাকে সিরিজ সার্কিট বলে ।

চিত্র ২.১২ : সিরিজ সার্কিট

সিরিজ সার্কিটের বৈশিষ্ট্য

• সিরিজ সার্কিটে কারেন্ট চলাচলের একটি মাত্র পথ থাকে
• সিরিজ সার্কিটের মোট রেজিস্ট্যান্স আলাদা আলাদা রেজিস্ট্যান্সের মানের যোগফলের সমান ।
অর্থাৎ, R = R1 + R2+ R3+ ..........+ Ra
• সিরিজ সার্কিটের প্রত্যেকটি রেজিস্ট্যান্সে কারেন্ট এর মান সমান থাকে অর্থাৎ, IT =I1=I2=I3=……..=Ia

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বেসিকস ফর আরসি

• সিরিজ সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ ভাগ হয়ে যায়
অর্থ্যাৎ, V = V1 + Vat V3t. +Vn
• এই সার্কিটের যে কোন একটি বা একাধিক লোড নস্ট বা অকেজো হলে বাকী লোড কোন কাজ করবে না
• এই সার্কিটের সবগুলো লোডকে একটি মাত্র সুইচের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই সার্কিটে সাপ্লাই ভোল্টেজ লোডের মধ্যে ক্ষমতা অনুযায়ী ভাগ হয়ে যায় ফলে কোন লোড ফুল
ডোস্টেজ পায় না বিধায় ঠিক মত কাজ করে না
• এই সার্কিটের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা এবং ব্যাটারী চার্জ করা হয়

সিরিজ সার্কিটের ব্যবহার

• কম ভোল্টেজের সরগ্রাম বেশি ভোল্টেজে ব্যবহারের জন্য এই ধরণের সংযোগ ব্যবহার করা হয় 
• কারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করার কাজে ব্যবহার করা হয়
• বিভিন্ন প্রকার আলোক সজ্জার
• মোটর এবং জেনারেটরের কয়েলে এই ধরনের সংযোগ ব্যবহার করা হয়

common.content_added_by

প্যারালাল সার্কিট (২.৫.৪)

২.৫.৪ প্যারালাল সার্কি (Parallel Circuit)

যখন কতকগুলো রেজিস্টরকে এমনভাবে সংযোগ করা হয় যাতে এদের একপ্রান্তগুলো একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো আর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে সংযোগ করা হয়, তখন তাকে প্যারালাল সার্কিট বলে।

চিত্র ২.১৩: প্যারালাল সার্কিট

প্যারালাল সার্কিটের বৈশিষ্ট্য

প্যারালাল সার্কিটে কারেন্ট চলাচলের একাধিক পথ থাকতে পারে। প্যারালাল সার্কিটের মোট রেজিস্ট্যান্সের উল্টানো মান প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্ন রেজিস্ট্যান্সের উল্টানো মানের যোগফলের সমান। অর্থাৎ,

1RT=1R1+1R2+1R3+------+1R0

• প্যারালাল সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে কারেন্ট ভাগ হয়ে যায়। অর্থাৎ,
I = 1 + 2 + 3 + ...........…+ In
• প্যারালাল সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ সমান থাকে । অর্থাৎ,
VT = V1 = V2= V3 = ....... = Vn
• এই সার্কিটে প্রত্যেকটি লোডে ভোল্টেজ সমান থাকে । তাই সবগুলো লোড পূর্ন শক্তিতে কাজ করে এই সার্কিটের যে কোন

 • একটি বা একাধিক লোড নষ্ট বা অকেজো হয়ে গেলেও বাকী লোডগুলো ঠিকমত কাজ করবে
• এই সার্কিটের প্রত্যেকটি লোডকে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রণ করা যায়
• এই সার্কিটের মাধ্যমে সকল ধরনের ওয়্যারিং এর কাজ করা হয়

 উদাহরন - ১ 

22, 4 এবং 62 রেজিস্ট্যান্স বিশিষ্ট একটি প্যারালাল সার্কিটের মোট রেজিষ্ট্যান্স বের কর ।

প্যারালাল সার্কিটের ব্যবহার 

• যে সার্কিটে ভোল্টেজ সমান কিন্তু কারেন্ট কম প্রয়োজন সে ক্ষেত্রে প্যারালাল সংযোগ ব্যবহার করা হয়
• বাসগৃহ ও কলকারখানার যাবতীয় সরঞ্জাম প্যারালালে সংযোগ করা হয়

 

common.content_added_by

সিরিজ-প্যারালাল/মিশ্র সার্কিট (২.৫.৫)

২.৫.৫ সিরিজ - প্যারালাল / মিশ্র সার্কিট (Series- Parallel Circuit)

কোন সার্কিটে যখন কিছু লোড সিরিজে ও কিছু লোড প্যারালালে সংযোগ করা হয় তখন তাকে সিরিজ ও প্যারালাল / মিশ্র সার্কিট বলে। এইরূপ কোন সংযোগে যদি কোন সার্কিট ব্যবহার করা হয় তাহলে তাকে সিরিজ- প্যারালাল সার্কিট বা মিশ্র সার্কিট বলে।

চিত্র ২.১৪ : সিরিজ প্যারালাল / মিশ্র সার্কিট

 

common.content_added_by

টেষ্ট বোর্ড (২.৫.৬)

২.৫.৬ টেষ্ট বোর্ড (Tent Board)

টেষ্ট বোর্ড এমন একটি টেটিং ব্যবস্থা যার সাহায্যে আমরা ইলেকট্রিক্যাল বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট এবং ওয়্যারিং এর দোষ ত্রুটি সহজে শনাক্ত করতে পারি। গঠন সহজ এবং কম খরচে এটি তৈরি করা সম্ভব বলে টেস্টিং ব্যবস্থার এটি বহুল ব্যবহৃত হয়।

টেস্ট বোর্ড তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল 

•কাঠের বোর্ড
• ফিউজ বা কাট-আউট
• সুইচ
• সকেট  

• বাতি 

• প্রয়োজনীয় কন্ডাক্টর

•  হোল্ডার 

চিত্র ২.১৫: টেষ্ট বোর্ড সার্কিট

টেস্ট বোর্ডের দক্ষতা যাচাই

তৈরীকৃত বর্তনীর হোল্ডারে একটি বাঘ সংযোগ করে সাপ্লাই দেয়ার পর সকেটে একটি বাতি লাগাতে হবে। তারপর সিরিজ সুইচ অন করলে সকেটের এবং টেষ্ট বোর্ডের বাতিটি সিরিজে সংযুক্ত হবে ফলে দু'টি বাতিই অনুজ্জ্বল হয়ে জ্বলবে। তবে প্যারালাল সুইচ অন করলে সকেটের বাতি উজ্জ্বল ভাবে স্কুলবে এবং সিরিজ বাতি বন্ধ হয়ে যাবে। যদি তাই হয় তবে বুঝতে হবে সিরিজ বোর্ড তৈরি সঠিক হয়েছে।

 

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion