বিশিষ্ট কানাডিয়ান দার্শনিক হার্বার্ট মার্শাল ম্যাকলুহান (Herbert Marshal McLuhan ) ষাটের দশকে সর্বপ্রথম কীভাবে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি এবং তথ্যের দ্রুত বিচরণ, স্থান এবং সময়ের বিলুপ্তি ঘটিয়ে সমগ্র বিশ্বকে একটি গ্রাম বা ভিলেজে রূপান্তরিত করা যেতে পারে সেই ধারণাটি সবার সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। গ্লোবাল ভিলেজ হলো এমন একটি পরিবেশ ও সমাজ যেখানে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করাসহ বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করতে পারে।
যোগাযোগ হল মানব সম্পর্কের প্রক্রিয়া, যা তথ্য, ধারণা, মতামত বা ভাবনা বিনিময় করে থাকে। যোগাযোগ বিনিময়ের প্রক্রিয়া প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশি সহজ ও দ্রুত করে তোলা হয়। যেমন ইমেইল, ফোন কল, টেক্সট মেসেজ, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি সকলে একটি যোগাযোগ প্রযুক্তি।
ই-মেইল তথা ইলেক্ট্রনিক মেইল হল ডিজিটাল বার্তা যা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। একজন ইউজার ইমেইল ব্যবহার করে তাঁর কোন অনলাইন একাউন্টের জন্য নিবন্ধন করতে পারেন, বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে পারেন, কাজের নির্দেশনা প্রদান করতে পারেন এবং অন্যান্য কাজ সম্পাদন করতে পারেন।
VoIP হল Voice over Internet Protocol এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি ইন্টারনেট প্রোটোকল যা ব্যবহার করে ইন্টারনেট বা অন্যান্য IP ভিত্তিক নেটওয়ার্কে ভয়েস ট্রান্সমিশন করা হয়। অর্থাৎ, এটি ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভয়েস কমিউনিকেশন করার একটি প্রযুক্তি।
ভিন্ন ভিন্ন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থান করে টেলিযোগাযোগ সিস্টেমের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে কোনো সভা অথবা সেমিনার অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে টেলিকনফারেন্সিং বলা হয়। ১৯৭৫ সালে টনি মারফ টেলিকনফারেন্সিং পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।
ভিডিও কনফারেন্সিং হল ইন্টারনেট নির্ভর একটি অত্যাধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। যে কোন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থানকারী একাধিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সংঘটিত যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় কথা বলা পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ ভিডিওর মাধ্যমে পরস্পর সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারেন তাকে ভিডিও কনফারেন্সিং।
আউটসোর্সিং তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পেশা। আর একটু সহজ ভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে। যারা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে দেন, তাঁদের ফ্রিল্যান্সার বলে।
ই গভর্নেন্স বলতে বুঝায় বেশিরভাগ সরকারি কাজ/ সেবা ডিজিটাল বা অনলাইনে করার বা পাবার ব্যবস্থা করা । যেমনঃ সরকারি কেনাকাটা র জন্য টেন্ডার বা দরপত্র আহ্বান করার জন্য বাংলাদেশে অনেকক্ষেত্রেই ইজিপি বা ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট পারচেজ সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। ই গভর্নেন্স এর ফলে সরকারি কাজ দ্রুত হয়। বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে এটি কার্যকর করার চেষ্টা চলছে।
টেলিমেডিসিন বলতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরবর্তী রোগীদেরকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা দেওয়াকে বোঝায়। এর মূল কথা হলো তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য খাতে গত কয়েক বছর ধরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় টেলিকনফারেন্স, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে এবং জনসাধারণ এর সুফল ভোগ করা শুরু করেছেন। তাছাড়া ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষা রিপোর্ট ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেও রোগ নির্ণয় সহজতর হচ্ছে। অনেক সময় অনেক জটিল ধরনের অপারেশন করার ক্ষেত্রে এজন চিকিৎসক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অন্য আরেকজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। Teladoc, Maven Clinic, iCliniq, MDlive, Amwell, Doctor on Demand, treatmentonline নামীয় অসংখ্য ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে অনলাইন চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। ২০২০ সালে বৈশ্বিক মহামারী Covid-19 এর প্রাদুর্ভাবের সময় ব্যবস্থাপত্রসহ স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রতিটি দেশে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট ফোন নম্বর সার্বক্ষণিক চালু রাখা হয়েছিল যার মাধ্যমে চিকিৎসকগণ নানাভাবে দেশবাসীকে প্রতিনিয়ত টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করেছেন।
সঠিক রোগ নির্ণয় হচ্ছে রোগীর যথাযথ চিকিৎসার পূর্বশর্ত। বর্তমান বিশ্বে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অন্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথাযথ প্রয়োগ দ্বারা সুক্ষ্মভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড (EHR: Electronic Health Record) ব্যবস্থাপনায় ডেটাবেজে রোগীর সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকে এবং রোগী তার EHR ব্যবহার করে যে কোনো স্থান হতে তার রোগ সম্পর্কিত তথ্য, রিপোর্ট, চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ইত্যাদি যে কোনো স্থানে বসে পেতে পারেন। এ ধরনের কাজ করতে যে সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে Therapy Notes, Epic care, Next Gen Ambulatory EHR, Care 360 ইত্যাদি অন্যতম।
ই-লার্নিং হলো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার একটি পদ্ধতি। এটি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদান এবং অনলাইন এসেসমেন্ট দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। ই-লার্নিং সিস্টেম একটি সামাজিক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে যা পাঠক এবং শিক্ষকের মধ্যে সরাসরি পরামর্শ, সাপোর্ট এবং মন্তব্যের ব্যবস্থা দেয়। শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারেন, কোর্স মডিউল সম্পন্ন করতে পারেন এবং এসেসমেন্ট দিতে পারেন।
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে চলাফেরা ও বিকাশের জন্য মানুষে মানুষে যোগাযোগের প্রয়োজন। তবে এখন আইসিটিতে সামাজিক যোগাযোগ বলতে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষে মানুষে মিথস্ক্রিয়াকেই বোঝায় । এর অর্থ হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ যোগাযোগ ও ভাব প্রকাশের জন্য যা কিছু সৃষ্টি, বিনিময় কিংবা আদান-প্রদান করে তাই সামাজিক যোগাযোগ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বর্তমানে এই যোগাযোগ হয়ে পড়েছে সহজ, সাশ্রয়ী এবং অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ। ইন্টারনেটের ব্যবহার, ই- মেইল, মোবাইল ফোন ও মেসেজিং সিস্টেম, ব্লগিং এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মসমূহ ব্যবহার করে বর্তমানে আইসিটিভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ অনেকাংশে সহজ। ইন্টারনেটে গড়ে উঠেছে অনেক প্ল্যাটফর্ম, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। যেমন: ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন ও ইনস্টাগ্রাম। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুইটি মাধ্যম হলো-ফেসবুক ও টুইটার ।
ফেসবুক (www.facebook.com) : ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট। ২০০৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি মার্ক জুকারবার্গ তার অন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এটি চালু করেন। বিনামূল্যে যে কেউ ফেসবুকের সদস্য হতে পারে। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি প্রকাশ, আদান-প্রদান ও হালনাগাদ করতে পারেন। এছাড়া এতে অডিও ও ভিডিও প্রকাশ করা যায়। ফেসবুকে যেকোনো প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব পেজ যেমন খুলতে পারে, তেমনি সমমনা বন্ধুরা মিলে চালু করতে পারে কোনো গ্রুপ। www.stastica.com এর রিপোর্ট (জুলাই- সেপ্টেম্বর ২০১৮) অনুযায়ী বিশ্বে facebook ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৭ বিলিয়ন।
টুইটার (www.twitter.com) : টুইটারও একটি সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে ফেসবুকের সঙ্গে এর একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এটিতে ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ ১৪০ Character-এর মধ্যে তাদের মনোভাব প্রকাশ ও আদান-প্রদান করতে হয়। এজন্য এটিকে মাইক্রোব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইটও বলা যায়। ১৪০ অক্ষরের এই বার্তাকে বলা হয় টুইট (tweet)। টুইটারের সদস্যদের টুইট বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য সে সদস্যকে অনুসরণ বা follow করতে পারেন। কোনো সদস্যকে যারা অনুসরণ করে তাদেরকে বলা হয় follower বা অনুসারী।
ই-কমার্স (E-Commerce)-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ইলেকট্রনিক কমার্স (Electronic Commerce)। এটা হলাে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাহায্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিক অন লাইনের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে লেনদেন ও পণ্যের আদান-প্রদান করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাণিজ্য করতে পারেন। অনলাইনের এ বাণিজ্যকে E-commerce বলে। Electronic Commerce-এর সংক্ষিপ্ত রূপই ই-কমার্স উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা পণ্যের বিবরণ বিজ্ঞাপন আকারে তাদের ওয়েব পেজে প্রদর্শন করেন। ক্রেতা কোনাে পণ্য সম্পর্কে আগ্রহী হলে ওয়েব পেজের অর্ডার ফরম পূরণ করে বিক্রেতার নিকট অর্ডার প্রদান করেন এবং একই পদ্ধতিতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশােধ করেন। বিক্রেতা। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্রেতার নিকট পণ্য পৌছে দেন। ইন্টারনেটভিত্তিক এরূপ ক্রয় পদ্ধতিকে অনলাইন শপিং বলা হয় এবং সামগ্রিক এ ব্যবসায় ব্যবস্থাপনাই ই-কমার্স। ব্যবহারঃ শিল্প,ব্যবসায-বাণিজ্য গবেষণা শিক্ষার্য চিকিৎসা (রাষ্ট্র পরিচালনা প্রভৃতিতে ই- কমার্স ব্যবহৃত হয়।
ই-কমার্স (E-Commerce) প্রকারভেদ: ই-কমার্স সাধারণত তিন প্রকার। যথা :
১. বিজনেস টু কনজিউমার (B2C) ই-কমার্স
২. বিজনেস টু বিজনেস (B2B) ই-কমার্স
৩. কনজিউমার টু কনজিউমার (C2C) ই-কমার্স
ই-কমার্সের জন্য যে কোনাে দেশে বসে অন্য এক দেশের পণ্য বা সেবা কেনা-বেচা করা সম্ভব। EDI-Electronic Data Interchange হওয়ায় টাকা হারানাের ভয় থাকে না। সপ্তাহে সাত দিন এবং প্রতিদিনের ২৪ ঘণ্টাই কেনা-বেচা করা সম্ভব। ই-কমার্সের ফলে কেনা-বেচার সময় কম লাগে এবং পণ্য বা সেবা দ্রুত কাস্টমার/ভােক্তা/ক্রেতার দোরগােয়ায় পৌছে যায়। ই- কমার্সের ফলে ভার্চুয়াল অরগানাইজেশন/ডিজিটাল ফার্ম গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ ফিজিক্যাল লােকেশন ছাড়াও অর্গানাইজেশন তাদের ব্যবসা করতে পারছে। ই-কমার্স বিশ্ব বাণিজ্যে যেমন বিপ্লব এনেছে তেমনি এনে দিয়েছে নিরাপত্তা ও দ্রুততা। ই-টেকনােলজির বড় একটি বৈশিষ্ট্য হলাে পেমেন্ট সিস্টেম। এই পেমেন্ট সিস্টেম ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড, ইলেকট্রনিক চেক, ফোন বা আইভিপি (IVP) গ্রহণ করে যা সাধারণ পে-সিস্টেমের চেয়ে অনেক বৈচিত্রময় , সুবিধাজনক এবং নিরাপদ। বাংলাদেশ ই-কমার্সের বর্তমান অবস্থা ও ই-কমার্স প্রসারে সরকারের ভূমিকা: বাংলাদেশে বাণিজ্য ঢুকছে আন্তর্জাতিক রীতি অনুসরণ করে। এখন বই, সিডি প্রভৃতি ছােটখাটো জিনিস বিক্রয় হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এরপর সবচেয়ে বড় জোয়ার আসবে মাঝারি মাপের সংস্থাগুলাের ক্ষেত্রে। ই-কমার্স যে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করেছে, সেখানে চাকরি জোটাতে প্রচুর আগ্রহ', উৎসাহ ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু নিজের ব্যবসাকে ‘নেটবন্দি করার দৌড়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বেশ পিছিয়ে। ই-কমার্সকে নিজের ব্যবসায় কাজে লাগানাের জন্য সবচেয়ে বেশি তৎপরতা এখন শুধু ঢাকাতে। ই-কমার্স প্রসারে সরকারের ভূমিকা: এ দেশে ই-কমার্সের প্রসার কত দ্রুত হতে পারে তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনেকের মতেই ই-কমার্সের প্রচলন যে শুধু অনিবার্য তাই নয়, আগামী দশকের মধ্যেই এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়ে যাবে এ দেশে। কেউ কেউ অবশ্য প্রসারের মাত্রা নিয়ে কিছুটা সন্দিহান। তবে সবাই যে ব্যাপারে একমত তা হলাে, গতানুগতিক ব্যবসা ও লেনদেনের পদ্ধতিকে পিছনে ফেলে দিয়ে ই-কমার্সকে যদি সত্যিই জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে ওঠতে হয় তাহলে সরকারকে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু দেশেই নয় , ই-কমার্সের মাধ্যমে যেহেতু বাণিজ্য চলবে বিশ্বজুড়ে, তাই নতুন আইনের প্রয়ােজন বিশ্বজুড়েই। আর এর জন্য সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষজ্ঞদের আলােচনা সভার আয়ােজন করা । ইন্টারনেট বিশ্ববাজারকে এক মঞ্চে নিয়ে এসেছে। সে কারণেই এ নতুন আইন বিশ্বজুড়ে অবাধ বাণিজ্যের পরিবেশের সাথে সঙ্গতি রেখেই তৈরি করা উচিত। আমাদের দেশের প্রধান দুর্বলতা, এখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার এখনও এতটা প্রচলিত নয়। কিন্তু আশার কথা, ই-কমার্সের ব্যবহার ও প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে শিল্পমহলকে অবহিত করতে বিভিন্ন সংগঠনগুলাে দেশ জুড়ে আলােচনার আয়ােজন করেছে। বাংলাদেশেও ই-কমার্সের সুযােগ ব্যাপক। কারণ বিশ্বায়নের এ যুগে কোনাে একটি দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব তাে আর সে দেশে আটকে থাকে না। আমেরিকার কিছু পাল্টালে তার ধাক্কা কিন্তু বাংলাদেশের গায়ে এসেও লাগবে ।
E-Commmerce-এর প্রয়ােগ
Cyber Criminal গণ নানাভাবে এর অসাধু সুবিধা নিচ্ছে। বর্তমানে পাসওয়ার্ড চুরি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাঙ্গা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে সাধারণত Cyber Criminal গণ নেটওয়ার্কে আড়ি পাতে এবং গােপন তথ্য জেনে নেয়। এর ফলে কোনাে ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
ইন্টারনেট হচ্ছে ইন্টারকানেক্টেড নেট্ওয়ার্ক(interconnected network) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটা বিশেষ গেটওয়ে বা রাউটারের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো একে-অপরের সাথে সংযোগ করার মাধ্যমে গঠিত হয়। ইন্টারনেটকে প্রায়ই নেট বলা হয়ে থাকে।
১৯৬০-এর দশকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি বা আরপা (ARPA) পরীক্ষামূলকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা এই নেটওয়ার্ক আরপানেট (ARPANET) নামে পরিচিত ছিল। এতে প্রাথমিকভাবে যুক্ত ছিল। ইন্টারনেট ১৯৮৯ সালে আইএসপি দ্বারা সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৯০ এর মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০ এর পরবর্তি সময়ের দিকে পশ্চিমাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হতে থাকে।
সংগৃহীত ডেটা বা উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের পর প্রয়োজন মত সাজানো বা অর্থপূর্ণ অবস্থাকে তথ্য বা ইনফরমেশন বলা হয়।
তথ্য প্রযুক্তির আলোড়ন সৃষ্টিকারি বিষয়গুলো হলোঃ-
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ইংরাজী নামের কথাটি, অর্থাৎ Artificial Intelligence কথাটি ১৯৫৬ সালে প্রথম চালু করেন জন ম্যাককার্থি। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞার্থ দিয়েছেন এই ভাবে যে, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল বুদ্ধিমান যন্ত্র নির্মাণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’।
ইন্টেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা শব্দটির আভিধানিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে গেলে বলা যায়, মানুষের চিন্তাভাবনায় অথবা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটাকে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স Artificial intelligence সংক্ষেপে AI । কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাকে কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজে লাগানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামের ভাষা ব্যাবহার করা হয়। যেমন – C, C++, PROLOG, LISP ইত্যাদি।
রবোটিক্স (Robotics): কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিদ্যার একটি শাখা হচ্ছে- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের একটি ক্ষেত্র হচ্ছে-রোবটিক্স। রোবট হচ্ছে এক ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা। যা নিয়ন্ত্রিত হয়- Computer program বা Electronic -circuit দ্বারা। অন্যভাবে বলা যায় রবোট হলো রবোট প্রযুক্তির(Robots Technology) একটি শাখা যেকানে রবোটের গঠন, কাজ বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করা হয়। রবোটবিজ্ঞান ইলেকট্রনিক্স, প্রকৌশল, বলবিদ্যা, মেকানিক্স ও সফটওয়্যার বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত। রবোট শব্দটি এসেছে স্লাভিক শব্দ Robota থেকে যার অর্থ শ্র্রমিক। এটি তৈরী হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে যেটি কাজ করতে পারে মানুষ কিংবা বিভিন্ন বুদ্ধিমান প্রাণীর মতো। জাপানের মুরাতা কোং- মুরাতা বয়। হোন্ডা কোং- অ্যাসিমো ও সনি কোং- আইবো যা মানুষের মতো কাজ করে।
রোবট শব্দটির সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত, এই শব্দটি দিয়ে আমরা এমন একধরনের যন্ত্রকে বোঝাই যেটি মানুষের কর্মকাণ্ডের অনুরূপ কর্মকাণ্ড করতে পারে। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত যে বিষয়টি রোবটের ধারণা, নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম কিংবা ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে পারে তাকে রোবটিক্স বলা হয়ে থাকে। রোবট কথাটি বলা হলে যদিও সাধারণভাবে আমরা মানুষের আকৃতির একটি যন্ত্র কল্পনা করি, কিন্তু প্রকৃত রোবট তার কাজের উপর নির্ভর করে যে কোনো আকারের বা আকৃতির হতে পারে। আজ থেকে এক যুগ আগেও রোবটের মূল ব্যবহার গাড়ির ওয়েল্ডিং কিংবা স্ক্রু লাগানোর মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে রোবটের কার্যপরিধিও বেড়ে যেতে শুরু করেছে এবং এমন কোনো কাজ নেই যেখানে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে না।
রোবটের গঠনে তিনটি নির্দিষ্ট বিশেষত্ব রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে :
১. একটি রোবট যে নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তৈরি হয়, তার উপর নির্ভর করে একটি বিশেষ যান্ত্রিক গঠন হয়ে থাকে।
২. রোবটের যান্ত্রিক কাজ করার জন্য | বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকতে হয়।
৩. রোবটকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় ।
রোবট শিল্প এখনো তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এটি সাগরের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত সৰ জায়গায়, যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভৰ নয়, সেখানে কাজ করে যাচ্ছে।
রোবটিকস ব্যবহার
১. বিপজ্জনক কাজে মানুষের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ যেমন সমুদ্রের তলদেশে, যে কোনো অনুসন্ধানী কাজে, মাইন ইত্যাদি বিস্ফোরক দ্রব্য নিষ্ক্রিয়করণে, নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরের কোনো কাজে, নদী-সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমে রোবট ব্যবহৃত হয়।
২. শিল্প-কারখানায় : শিল্পোৎপাদন কাজে, শিল্প-কারখানার ভারী বস্তু নড়াচড়া করানো, প্যাকিং, সংযোজন, পরিবহন ইত্যাদি শ্রমসাধ্য কাজ ছাড়াও কম্পিউটার এইডেড কাজে রোবটিক্স-এর ব্যবহার রয়েছে। ৩. সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজে : মাইক্রোসার্কিটের উপাদান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষণ কাজ এবং ইলেকট্রনিক আইসি, প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড ইত্যাদির তৈরির জন্য রোবট ব্যবহৃত হয়।
৪. টিকিৎসা ক্ষেত্রে : সার্জারি, জীবাণুমুক্তকরণ, ওষুধ বিতরণ ইত্যাদি কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়। ৫. সামরিক ক্ষেত্রে : বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং অন্যান্য মিলিটারি
অপারেশনে রোবট ব্যবহৃত হয়।
৬. শিক্ষা ও বিনোদনে: শারীরিকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু বা অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় রোবটের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে খেলনা রোবট এবং মিডিয়া আর্টের ক্ষেত্রেও রোবট ব্যবহৃত হয়।
৭. নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণে : বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য, অন্ধকারে কোনো আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করার জন্য, দুষ্কৃতকারী কিংবা বিপজ্জনক আসামীকে ধরা এবং পর্যবেক্ষণে পুলিশকে রোট সহায়তা দিতে থাকে।
৮. মহাকাশ গবেষণায় মহাকাশে কিংবা অন্য গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কিত নানাবিধ ওষ্ঠ্যানুসন্ধান ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বা মহাকাশ যান প্রেরণ করার সময় ব্যাপকহারে রোবটের ব্যবহার আছে।
৯. ঘরোয়া কাজে দৈনন্দিন অরোরা কাজে, গৃহকর্মী হিসেবে নিত্যনৈমিত্তিক কার্যাদি সম্পাদনের জন্য রোবট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মানুষের দৈহিক গঠন বা আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিকে বায়োমেট্রিক বলে। একজন মানুষের সাথে অন্য মানুষের আচরণ বা গাঠনিক বৈশিষ্ট্য কখনোই একরকম হবে না। বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতার বায়োমেটিকের প্রকারভেদ দুইরকম :
আঙুলের ছাপ শনাকরণ (Finger print) : পৃথিবীতে প্রকৃতিগতভাবে প্রতিটি মানুষের আঙুলের ছাপ ভিন্ন অর্থাৎ একজনের সাথে অন্য আরেকজনের আঙুলের ছাপের মিল নেই। একজনের টিপসই কখনোই অন্যজনের সাথে খাপ খাবে না। ফিংগার প্রিন্ট রিডারে কারো আঙুলের ছাপ দেয়ার পর ছাপটির ছবি কম্পিউটার ডেটাবেজে সংরক্ষিত হয়ে যায়। ফিংগার প্রিন্ট মেশিনটি আঙুলের রেখার বিন্যাস, ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপচিত্র তৈরি করে।
(ক) শরীরবৃত্তীয় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি
হাতের রেখা শনাক্তকরণ (Hand geometry) : এ পদ্ধতিতে হাতের আকার, পুরুত্ব, হাতের রেখার বিন্যাস ও আঙুলের দৈর্ঘ্য বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তবে কায়িক পরিশ্রম করে এমন মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি খুব বেশি কার্যকর নয়। তাছাড়া হাতে কিছু লেগে থাকলেও এ পদ্ধতির কার্যকারিতা সেভাবে পরিলক্ষিত হয় না।
আইরিশ শনাক্তকরণ (Irish scanning) : এ পদ্ধতিতে চোখের মণির চারপাশে বেষ্টিত রঙিন বলয় বা
আইরিশ বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। শনাক্তকরণের জন্য সময়ও তুলনামূলকভাবে
কম লাগে এবং সুক্ষ্মভাও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় হয়ে থাকে। তবে কন্টাক্ট লেন্স পরা থাকলে এ পদ্ধতি সবসময়
কার্যকরী নাও হতে পারে।
মুখমন্ডলের অবয়ব শনাক্তকরণ (Face recognition) : এই পদ্ধতিতে পুরো মুখমণ্ডলের ছবি তুলে শনাক্ত করা হয়। আগে থেকে রক্ষিত স্যাম্পল মানের সাথে যার মুখমণ্ডলের আকৃতি তুলনা করা হবে তার ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করে সেটি তুলনা করা হয়।
ডিএনএ পর্যবেক্ষণ (DNA test) : ডিএনএ (DNA Deoxyribo Nucleic Acid) টেস্টের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তিকে অত্যন্ত নিখুঁত ও প্রশ্নাতীতভাবে শনাক্ত করা যায়। মানব শরীরের যে কোনো উপাদান যেমন— রক্ত, চুল, আঙুলের নখ, মুখের লালা হতে ডিএনএ'র নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর এগুলোর গঠন- প্রকৃতি শনাক্তের দ্বারা ম্যাপ বা ব্লু-প্রিন্ট বায়োলজিক্যাল ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে নমুনা নিয়ে পূর্ববর্তী ডেটার সাথে মিলিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়।
(খ) আচরণগত (Behavioral) বায়োমেট্রিক পদ্ধতি
কিবোর্ডে টাইপিং গতি যাচাইকরণ (Typing keystroke verification) : কিবোর্ড কিংবা এ জাতীয় কোনো ইনপুট ডিভাইসে তার গোপনীয় কোড কত দ্রুত টাইপ করে দিতে পারে তার সময় পুর্বের সময়ের সাথে মিলিয়ে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
হাতে করা স্বাক্ষর যাচাইকরণ (Signature verification) : এটি একটি বহুল ব্যবহৃত ও দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে স্বাক্ষরের আকার, ধরন, লেখার পতি, সময়, লেখার মাধ্যমের (যেমন- কলম, পেনসিল ইত্যাদি) চাপকে যাচাই করে শনাক্তকরণ করা হয়।
কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ (Voice recognition) : এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে মাইক্রোফোনের মাধ্যমে ধারণপূর্বক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে ভয়েস রেকর্ডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বর রেকর্ড করা হয় এবং পূর্বের ধারণকৃত কণ্ঠস্বরের সাথে তুলনা করে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ পদ্ধতিতে ব্যক্তির সর্দি, কাশি হলে শনাক্তকরণে বিঘ্নের সৃষ্টি হয়।
বায়োইনফরমেটিক্স জীববিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, ইনফরমেশান ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত এবং পরিসংখ্যানের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিষয়। মূলত এই বিষয়টির জন্ম হয়েছে জীববিজ্ঞানের বিশাল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করে সেগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য ।
বায়োইনফরমেটিক্সের প্রথম বড় সাফল্য এসেছিল যখন ১৩ বছরের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর মানব জিনোম প্রথমবার সিকোয়েন্স করা হয়েছিল এবং সেই তথ্য অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছিল যেন সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা সেটি পেতে পারে। এখন প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে কয়েক ঘণ্টার ভেতর পুরো মানব জিনোম সিকোয়েন্স করা সম্ভব। বায়োইনফরমেটিক্সের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হচ্ছে ক্যান্সারের উপর গবেষণা। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা মানুষের জন্য আলাদা আলাদাভাবে তার নিজস্ব ওষুধ ব্যবহৃত হবে, সেটিও সম্ভব হবে বায়োইনফরমেটিক্সের গবেষণার ফলে। প্রোটিনের গঠন বহুদিন থেকে বিজ্ঞানীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। । বায়োইনফরমেটিক্স এই ব্যাপারেও মূল গবেষণায় বড় ভূমিকা পালন করছে। বিজ্ঞানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিবর্তন। এই বিবর্তনের রহস্য উন্মোচনে বায়োইনফরমেটিক্স অনেক বড় একটি ভূমিকা পালন করছে।
সাধারণত নিচের চারটি ভিন্ন ভিন্ন শাখার উপাদান ও কৌশলের সমন্বয়ে বায়োইনফরমেটিক্স পদ্ধতি কাজ করে থাকে :
১. আণবিক জীববিদ্যা ও মেডিসিন : ডেটা উৎস বিশ্লেষণের কাজ করে।
২. ডেটাবেজ : নিরাপদ ডেটা সংরক্ষণ ও ডেটা রিট্রিভ (Retrive) করা।
৩. প্রোগ্রাম : উপাত্ত বিশ্লেষণ অ্যালগরিদম যার মাধ্যমে বায়োইনফরমেটিক্স কঠোরভাবে সুনির্দিষ্ট করা হয়।
৪. গণিত ও পরিসংখ্যান : এর সাহায্যে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়।
বায়োইনফরমেটিক্সের ব্যবহার
মূলত জৈবিক পদ্ধতি বিশ্লেষণ সম্পর্কে সম্যক এবং সঠিক ধারণা অর্জন করার ক্ষেত্রে বায়োইনফরমেটিক্স ব্যবহৃত হয়। আর এই জৈবিক তথ্য হিসাব-নিকাশ এবং এ সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যার সমাধানে কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহারও অপরিহার্য। তবে জিনোম সিকোয়েন্স, প্রোটিন সিকোয়েন্স ইত্যাদি গঠন উপাদানের ইলেকট্রনিক ডেটাবেজ গঠনে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও মলিকুলার মেডিসিন, জিনথেরাপি, ওষুধ তৈরিতে, বর্জ্য পরিষ্কারকরণে, জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণায়, বিকল্প শক্তির উৎস সন্ধানে, জীবাণু অস্ত্র তৈরিতে, ডিএনএ ম্যাপিং ও অ্যানালাইসিস, জিন ফাইন্ডিং, প্রোটিনের মিথষ্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণে বায়োইনফরমেটিক্স ব্যবহৃত হয়।
“পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা টেকনোলজি বলে।“
ন্যানো(Nano) শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ থেকে এসেছে যার আভিধানিক অর্থ dwarft ( বামন বা জাদুকরী ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ)।
ন্যানো হলো একটি পরিমাপের একক। এটি কতটা ছোট তা কল্পনা করা কঠিন। ১ মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগকে বলা হয় ১ ন্যানো মিটার। অর্থাৎ 1 nm = 10-9 m
যে বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনােলজি ব্যবহার করে জীবের বৈশিষ্ট পরিবর্তন করা হয় তাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে। বিশদভাবে বলতে গেলে, প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষুদ্রতম একক হলাে কোষ (cell)। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে বলা হয় নিউক্লিয়াস (Nucleus) । এই নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচানাে বস্তু থাকে যাকে বলা হয় ক্রোমােজোম (Chromosome)। ক্রোমােজোম, জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে। ক্রোমােজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচানাে কিছু বস্তু থাকে যাকে বলা হয় ডিএনএ (DNA-Deoxyribo Nucleic Acid) এ ডিএনএ অনেক অংশে ভাগ করা থাকে । এর এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে বলে জীন (Gene)। মূলত:ক্রোমােজোমের অভ্যন্তরে অবস্থিত জনই জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে।
উদাহরণস্বরুপ: মানুষের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমােজোম রয়েছে ও বিড়ালের রয়েছে ৩৪ জোড়া। আবার মশার আছে ৬ জোড়া। এদের মধ্যে একজোড়া ক্রোমােজোম বংশগতির বাহক। আমাদের শরীরে প্রায় ৩০০০০০ জীন রয়েছে। এক সেট পূর্ণাঙ্গ জীনকে জীনােম (Genome) বলা হয়। অর্থাৎ বায়ােটেকনােলজির মাধ্যমে কোনাে প্রাণীর জিনােমকে (Genome) নিজের সুবিধানুযায়ী সাজিয়ে নেয়া বা মডিফাই করাকেই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে
সংক্ষেপে বলা যায়, কোনাে জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খণ্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জিনতত্ব প্রকৌশল বলে। জিন প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনাে বিশেষ জিনকে ক্রোমােজোমের ডিএনএ (DNA) অণু থেকে পৃথক করে তাকে কাজে লাগানাে। এই পৃথকীকৃত জিনকে কোনাে জীবকোষে প্রবেশ করিয়ে বা কোষ হতে সরিয়ে উক্ত জীবটির বৈশিষ্ট্যের বংশগতি বদলে দেওয়া সম্ভব।
গ্রিক শব্দ ক্রাউস(kruos) থেকে ক্রায়ো (Cryo) শব্দটি এসেছে যার অর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবং ‘সার্জারি’ অর্থ শৈল্য চিকিৎসা। অর্থাৎ ক্রায়োসার্জারি হলো এক ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয়। ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপি বা ক্রায়োবায়োলেশনও বলা হয়।
আইটি (IT) নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা হলো উৎপাদন প্রক্রিয়ার একটি উন্নয়ন পদক্ষেপ যা সাধারণত আইটি সেবার ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত। এটি উৎপাদন এবং বিনিময়ের প্রক্রিয়াতে কম্পিউটার এবং অন্যান্য সংজ্ঞায়িত প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রভাব ফেলে।
আইটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা সম্প্রসারণগতভাবে উন্নয়ন পাচ্ছে কারণ এটি উৎপাদন এবং বিনিময়ের জন্য সম্পূর্ণ প্রযুক্তিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ সম্পূর্ণ অটোমেটেড উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের আইটি সেবা এবং একটি স্কেল এরপর স্কেল উত্পাদন সম্পর্কিত তথ্য মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে।
বর্তমানে আমাদের দেশ পােশাক শিল্প, মৎস্য খাত, ওষুধ শিল্প, নিত্যপ্রয়ােজনীয় সামগ্রী ইত্যাদি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে উৎপাদনের ধারাবাহিকতাকে ধরে রেখেছে। আইসিটিনির্ভর এ সকল যন্ত্রপাতির প্রত্যক্ষ ব্যবহার মানুষের চাহিদা পূরণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিচের উদাহরণটি হতে তােমরা উৎপাদন ব্যবস্থায় কীভাবে আইসিটি ব্যবহার হচ্ছে তার একটি ধারণা পাবে। মালয়শিয়াতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালে ৮০ হাজার গরুর কানে Radio-Frequency Identification (RFID) সংযােজন করেছে। এতে প্রতিটি পশুকে সহজে শনাক্ত করা যাবে এবং এর মালিকের নাম, লিঙ্গ, জন্ম উৎস ইত্যাদি তথ্যও পাওয়া যাবে। এশিয়াতে এটিই প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ। এতে করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযােগিতা করতে সুবিধা হবে। তাছাড়া সংক্রমিত রােগ প্রাদুর্ভাব রােধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে। আমাদের দেশেও বর্তমানে অনেক ভারী ও মাঝারি শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থায় আইসিটি ব্যবহার করছে। অধিকাংশ যন্ত্রাংশ কম্পিউটার বা প্রােগ্রামনির্ভর। যেমন খাদ্যশিল্প, আবাসন শিল্প, বস্ত্রশিল্প ইত্যাদি।
চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতা মানুষের সহজাত, একটি যন্ত্রকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে, সেটিকে চিন্তা করানো কিংবা বিশ্লেষণ করানোর ক্ষমতা দেওয়ার ধারণাটিকে সাধারণভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সবচেয়ে সফল ক্ষেত্র হিসেবে মেশিন লার্নিং-এর কথা বলা যায়। মেশিন লার্নিং-কে মোটা দাগে তিন ভাগে ভাগ করা যায়: সুপারভাইজড (Supervised) লার্নিং, আনসুপারভাইজড (unsupervised) লার্নিং এবং রিইনফোর্সমেন্ট (reinforcement) লার্নিং। Supervised Learning-এ মেশিনকে কোনো কিছু শেখানোর জন্য অনেকগুলো উদাহরণ দেয়া হয়, যা থেকে তথ্য আহরণ করে সে শিখে যায় তাকে কি করতে হবে। যেমন ধরো, আমরা কম্পিউটারকে শেখাতে চাই কেমন করে কুকুর আর বিড়াল চিনতে হয়। সেক্ষেত্রে তাকে অনেকগুলো কুকুরের আর বিড়ালের ছবি দেখিয়ে বলে দেয়া হবে কোনগুলো কুকুর আর কোনগুলো বিড়াল। কম্পিউটার তখন কোনো অ্যালগরিদম ব্যবহার করে শিখে ফেলবে কোন কোন বৈশিষ্টের দিক থেকে এ দু'টো প্রাণীকে আলাদা করা যায়, আর এরপর নতুন কোনো ছবি দেখলে নিজেই শনাক্ত করতে পারবে সেটা কুকুর নাকি বিড়াল। অন্যদিকে Unsupervised Learning-এ কম্পিউটারকে নির্দিষ্ট করে কিছু বলে দেয়া হয় না, অনেকগুলো ডেটা বিশ্লেষণ করে সে বুঝতে পারবে যে কুকুর আর নেকড়ে অনেকটা একই রকম, আবার এরা বানর ও শিম্পাঞ্জির থেকে ভিন্ন। Reinforcement learning-এর ক্ষেত্রে কম্পিউটারকে আলাদাভাবে কিছু শেখানো হয় না, নিজের মতোই কাজ করতে দেয়া হয় । কাজ শেষে তাকে শুধু বলা হয় কাজটা কতটুকু ঠিক হয়েছে বা ভুল হয়েছে, যাতে কম্পিউটার এর পরের বার তার আচরণ বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে। এভাবে প্রথম প্রথম সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হবে, কিন্তু অনেকবার কাজটা করতে করতে সে ঠিকই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে। একটু খেয়াল করে দেখো, এই তিন ধরনের মেশিন লার্নিং-ই কিন্তু মানুষ যেভাবে তার পরিবেশ থেকে শেখে, অনেকটা সেভাবেই কাজ করে । আউটপুট স্তর স্তর ডেটাগুলোর পরস্পরের সাথে মিল বা অমিল কতটুকু। যেমন ধরো, কম্পিউটারকে অনেকগুলো প্রাণীর ছবি দিয়ে আমরা যদি কোনোটারই নাম না বলে দেই, তাও সে বুঝতে পারবে আমরা আমাদের জীবদ্দশাতেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কিছু সফল প্রয়োগ দেখতে পাব, তার একটি হচ্ছে ড্রাইভারবিহীন স্বয়ংক্রিয় গাড়ি। আবহাওয়ার সফল ভবিষ্যৎবাণী আমরা ইতোমধ্যে দেখতে শুরু করেছি। এ ছাড়াও বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর এমন কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই। যেমন চিকিৎসাবিদ্যা, অটোমোবাইল, ফাইন্যান্স, সার্ভেইল্যান্স, সোশাল মিডিয়া, এন্টারটেনমেন্ট, শিক্ষা, স্পেস এক্সপ্লোরেশন, গেমিং, রোবটিক্স, কৃষি, ই-কমার্সসহ স্টক মার্কেটের শেয়ার লেনদেন, আইনি সমস্যার সম্ভাব্য সঠিক সমাধান, বিমান চালনা, যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার বর্তমানে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে কৃত্রিম বাস্তবতা, অর্থপতভাবে শব্দ দুটি যদিও স্ববিরোধী কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটি এমন এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করে যেটি বাস্তব নয় কিছু বাস্তবের মতো চেতনা সৃষ্টি করে এবং মস্তিষ্কে একটি বাস্তব অনুভূতি জাগায়। আমরা জানি, স্পর্শ, শোনা কিংবা দেখা থেকে মানুষের মস্তিষ্কে একটি অনুভূতির সৃষ্টি হয় যেটাকে আমরা বাস্তবতা বলে থাকি। কতকগুলো যন্ত্রের সাহায্যে যদি আমরা এই অনুভুতিগুলো সৃষ্টি করতে পারি তাহলে অবস্থাটি মানুষের কাছে পুরোপুরি বাস্তব মনে হতে পারে। এটি নানাভাবে করা সম্ভব। অনেক সময় বিশেষ ধরনের চশমা বা হেলমেট পরা হয়, যেখানে দুই চোখে দুটি ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। অনেক সময় একটি স্ক্রিনে ভিন্ন ভিন্ন প্রজেক্টর দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে সেই অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করার জন্য মূলত কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে কোনো একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক ত্রি-মাত্রিক চিত্রায়ণ করা হয়। তাই ৰলা যায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরিকৃত এমন এক ধরনের কৃত্রিম পরিবেশ যা উপস্থাপন করা হলে ব্যবহারকারীদের কাছে এটিকে বাস্তব পরিবেশ মনে হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশ তৈরির জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারে সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হয়। সাধারণ গ্রাফিক্স আর ভার্চুয়াল জগতের গ্রাফিক্সের মধ্যে তফাত হলো এখানে শব্দ এবং স্পর্শকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়। ব্যবহারকারীরা যা দেখে এবং স্পর্শ করে তা বাস্তবের কাছাকাছি বোঝানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি চশমা বা হেলমেট (HMD Head Mountained Display) ছাড়াও অনেক সময় হ্যান্ড গ্লাভস, বুট, স্যুট ব্যবহার করা হয়। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারে গ্রাফিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে দূর থেকে পরিচালনা করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। একে টেলিপ্রেজেন্স বলা হয়। এছাড়াও এ পদ্ধতিতে বাস্তবভিত্তিক শব্দও সৃষ্টি করা হয়, যাতে মনে হয়, শব্দগুলো বিশেষ কোনো স্থান হতে উৎসারিত হচ্ছে।
কোন ডেটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অথবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে অথবা একজনের ডেটা অন্যজনের নিকট বাইনারি পদ্ধতিতে স্থানান্তর করার পদ্ধতি হলাে ডেটা কমিউনিকেশন।
কমিউনিকেশন সিস্টেম হল এমন একটি পদ্ধতি বা পদ্ধতিকে বুঝাতে যেটি একটি বা একাধিক উপকরণের মাধ্যমে তথ্য বা ডাটা সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে। কমিউনিকেশন সিস্টেম সাধারণত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, টেলিফোন নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট, রেডিও, টেলিভিশন ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম ইত্যাদি থাকে।
এই সিস্টেমগুলো একটি নির্দিষ্ট প্রোটোকল ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য এক বা একাধিক উপকরণের মাধ্যমে অন্যান্য উপকরণের কাছে প্রেরণ করে। সংস্থা, ব্যবসায় ও ব্যক্তিগত উদ্যোক্তা সহ অনেক মানুষ এই সিস্টেমগুলো ব্যবহার করে তথ্য প্রসার করে থাকেন।
ডেটা কমিউনিকেশনে উৎস থেকে ডেটা গন্তব্যে পাঠানোর সময় একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাঠানো হয়ে থাকে। যে পদ্ধতিতে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে বা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে তাকে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড বলে।
উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা দুটি পদ্ধতিতে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে।
১. প্যারালাল ট্রান্সমিশন
২. সিরিয়াল ট্রান্সমিশন
প্যারালাল ট্রান্সমিশন (Parallel Transmission)
যে ট্রান্সমিশনে ডেটার সবগুলো বিট ভিন্ন ভিন্ন লাইন ব্যবহার করে একসাথে সমান্তরালভাবে আদান প্রদান করা হয় তাকে প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে ডেটা বিট ভিন্ন ভিন্ন লাইনের মধ্যে দিয়ে একই সাথে পাঠানো হয়ে থাকে। প্যারালাল ট্রান্সমিশনে ডেটা সাধারণত ৮ বিট, ১৬ বিট বা ৩২ বিট ইত্যাদি উপায়ে চলাচল করতে পারে।
সিরিয়াল ট্রান্সমিশন (Serial Transmission)
যে ট্রান্সমিশনে একটি মাত্র লাইন ব্যবহার করে ডেটা পর্যায়ক্রমে ১ বিট করে প্রেরক থেকে প্রাপকের দিকে ট্রান্সমিট করা হয়ে থাকে তাকে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে একসাথে আট বিট ডেটা করে পাঠানো হয়ে থাকে। উৎস থেকে গন্তব্যের দূরত্ব বেশী হলে সধারনত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
Note: সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সমিশন হওয়ার সময় অবশ্যই দুই কম্পিউটারের মধ্যে এমন একটি সমন্বয় ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে সিগনাল বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে পারে। বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে গ্রহীতা কম্পিউটার সেই সিগনাল থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারে না। সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে ডেটা ট্রান্সমিট করার সময় ডেটার বিট গুলোর মধ্যে যে সমন্বয় করা হয় তাকে বিট সিনক্রোনাইজেশন বলে।
বিট সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১. অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
২. সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
৩. আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটা প্রেরক হতে গ্রাহক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রন্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে । অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় অসমান হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ক্যারেক্টার এর ৮ বিটের সাথে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি বা দুটি স্টপ বিট যুক্ত করে প্রতিটি ক্যারেক্টার 10 অথবা 11 বিটের ডেটায় পরিণত করে তারপর ট্রন্সমিট করা হয়। কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটারে কিংবা কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে ডেটা পাঠানোর জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
Note: কীবোর্ড হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে, কম্পিউটার হতে কার্ড রিডারে, কম্পিউটার হতে পাঞ্চকার্ড এ অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission)
যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটাকে প্রথমে একটি প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করে ডেটাকে ব্লক বা প্যাকেট আকারে ভাগ করে প্রতিবারে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ব্লক ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় সব সময় সমান থাকে। প্রতিটি ব্লকের শুরুতে একটি হেডার ইনফরমেশন ও শেষে একটি ট্রেইলার ইনফরমেশন যুক্ত করা হয়। কম্পিউটার হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার বা একাধিক ডিভাইসে একই সাথে ডেটা ট্রান্সমিট করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Isochronous Transmission)
অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন এর সমন্বিত রুপ হলো আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন, যাকে আবার সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের উন্নত ভার্সনও বলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে ডেটা সুষম বিটরেটে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে প্রেরক হতে প্রাপকে অ্যাসিনক্রোনাস পদ্ধতির স্টার্ট ও স্টপ বিটের মাঝে ব্লক আকারে ডেটা স্থানান্তরিত হয়। এখানে দু’টি ব্লকের মধ্যে সময়ের পার্থক্য একেবারে 0 (শূন্য) রাখার চেষ্টা করা হয়। রিয়েলটাইম অ্যাপ্লিকেশন বা মাল্টিমিডিয়া ( অডিও, ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি) ফাইল ট্রন্সমিট করার জন্য আইসোক্রনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।
দুইটি ডিভাইস (মোবাইল ফোন, কম্পিটার ইত্যাদি) এর মধ্যে ডাটা (মেসেজ, ভয়েস কল, ভিডিও কল, ফাইল, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি) স্থানান্তর কে ট্রান্সমিশন মোড বলা হয় ।
এই ডাটা ট্রান্সমিশন মুডগুলিকে কম্পিউটার সায়েন্স মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করেছে
১। সিমপ্লেক্স (Simplex)
২। হাফ ডুপ্লেক্স (Half-Duplex)
৩। ফুল ডুপ্লেক্স (Full-Duplex)
১। সিমপ্লেক্স (Simplex): এটি হল - ট্রান্সমিশন মোডের মধ্যে সবচাইতে খারাপ বা কম জনপ্রিয় পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে Sender শুধু Data পাঠায় আর রিসিভার তা গ্রহন করে। যেমন - কি-বোর্ড (ডাটা রিসিভ করে না শুধু পাঠায়), মনিটর (ডাতা পাঠাতে পারে না শুধু রিসিভ করে)। সহজ একটা উদাহরন হল - রেডিও বা এফ এম রেডিও (একজন মহাজ্ঞানী বলে আর বাকিরা শোনে)। এই ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশনে কিন্তু Sender নির্দিষ্ট দিকে ডাটা পাঠায় তাই এইটাকে কেউ কেউ Unidirectional Transmission Mode ও বলে।
২। হাফ-ডুপ্লেক্স (Half-Duplex): এই ধরনের মোডে Sender এবং Receiver উভয় ডাটা পাঠায় এবং রিসিভ করে । তবে এক সাথে না। একজন ডাটা send করে অন্য জন তখন ডাটা রিসিভ করে। ঠিক অপরজন আবার ডাটা Send করে তখন বিপরিত জন ডাটা রিসিভ করে। উদাহরন - Walkie-talkie (পুলিশ মামাদের কাছে দেখা যায় - যেটাকে আমরা ওয়্যারলেস বলে চিনি - একটু ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন - মামারা শুধু তাদের হাই কমান্ড থেকে আসা বার্তা শুনছে, আর যখন কিছু বলতে চায় তখন তারা এই ডিভাইসের পার্শে থাকা বাটনে প্রেস করে বলে। আরেকটা তথ্য দেই - তারা প্রতিটা Sentence এর শেষে Over, Done ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে যেন অপরজন বুঝতে পারে যে, এখন তার বলার সময় হয়েছে) ।
৩। ফুল-ডুপ্লেক্স (Full Duplex): এটি হল ডাটা ট্রান্সমিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোড । এই মোডে বলা যায় ম্যারাথন পদ্ধতিতে ডাটা ট্রান্সমিশন করা যায় । একই সাথে Sender এবং Receiver উভয় পক্ষ্যই ডাটা SEND এবং Receive করতে পারে। যেমন - Telephone বা মোবাইল ফোন। [ভয়েস কল, ভিডিও কল ইমু হোক, হোয়াটস আপ, মেসেঞ্জার যেটাই হোক - আমরা একই সময় উভয়েই কথা বলতে পারি এবং শুন্তেও পারি বিষয় টা সেই রকম]
ডেটা বিতরণ বা ডেলিভারি মোড হল একটি পদ্ধতি যা ব্যবহার করে ডেটা বা তথ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানো হয়। এটি একটি ডেটা ট্রান্সফার পদ্ধতি।
যার মাধ্যমে ডেটা এক স্থান থেকে অন স্থানে বা এক ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসে ডেটা/তথ্য আদান-প্রদান বা স্থানান্তর হয় তাকেই ডেটা কমিউনিকেশন মিডিয়া/মাধ্যম বলে।
ডেটা কমিউনিকেশন মিডিয়া বা নেটওয়ার্ককে মূলত দুইভাগে ভাগ করে, যথাঃ
এক বা একাধিক ইসুলেশনযুক্ত তারকে নিরবচ্ছিন্ন সাধারণ রক্ষাকারী আবরণের মধ্যে স্থাপন করা হলে তাকে ক্যাবল বলে । উলঙ্গ তারের ক্ষেত্রে কন্ডাক্টরের প্রস্থচ্ছেদ ব্যাস ১/২ ইঞ্চির বেশি হলে তাকে ক্যাবল বলে অভিহিত করা হয়।
Bluetooth
Wi-fi
WiMax
Fiber Optic
তামার তার
কো-এক্সিয়াল ক্যাবল
অপটিক্যাল ফাইবার
ওয়্যারলেস মিডিয়া
অপটিক্যাল ফাইবার হচ্ছে কাঁচ বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি আবদ্ধ একটি মাধ্যম যার মধ্য দিয়ে আলো অনেক দূর পর্যন্ত পরিবহন করা যায় এবং আলোক শক্তির মাধ্যমে ডেটাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত transmit করা যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের ভিতর আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে।
লেজার (Laser) হলো "Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation" এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি উচ্চ শক্তিশালী তরঙ্গবেগ সম্পন্ন তড়িৎ উৎস যা উচ্চ আবেদনসমূহে ব্যবহৃত হয়।
লেজার রশ্মির ব্যবহার
দুই বা ততোধিক ডিভাইসের মধ্যে কোন ফিজিক্যাল কানেকশন কিংবা ক্যাবল সংযোগ ছাড়া ডেটা কমিউনিকেশনের পদ্ধতি হল ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনকে ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে কিংবা ডিভাইসসমূহের মধ্যে দূরত্বের ভিত্তিতে চার ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
যেসকল স্থানে তার বা ক্যাবলভিত্তিক যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয় না। সেসকল স্থানে যোগাযোগের জন্য ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম একটি অপরিহার্য মাধ্যম। আবার প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ পাওয়ার জন্য বিশেষ করে সহজে বহনযোগ্য ডিভাইস যেমনঃ ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন মাধ্যম ব্যবহার করা আবশ্যকীয়।
বর্তমান প্রচলিতমোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়।
যথা- ১) জিএসএম (GSM) ও ২) সিডিএমএ (CDMA)।
জিএসএম (GSM)
GSMএর পূর্ণরূপ (Global System for Mobile Communication) গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন। এই প্রযুক্তিতে একটি সিম যেকোন মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যায়। এটি FDMA ও TDMA এর সমন্বয়ে গঠিত একটি সম্মিলিত চ্যানেল আ্যকসেস পদ্ধতি। ইহা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় মোবাইল টেলিফোন প্রযুক্তি। বিশ্বের প্রায় ২১৮ টি দেশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বাংলাদেশে গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, টেলিটক, রবি ইত্যাদি সব জিএসএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
সিডিএমএ (CDMA)
(CDMA) এর পূর্ণরূপ (Code Division Multiple Access) কোড ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাকসেস। এই প্রযুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট মোবইল সেটের একটি নির্দিষ্ট সিম সংযুক্ত থাকে। ঐ সিম অন্য কোন মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যায় না। এই প্রযুক্তিতে প্রতিটি কল বা ডেটা পাঠানো হয় ইউনিক কোডিং পদ্ধতিতে। ইহা একাধিক ব্যবহার কারীকে একইি ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে সিটিসেল সিডিএমএ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও উন্নয়নের এক একটি পর্যায় বা ধাপকে মোবাইল ফোনের প্রজন্ম বলা হয়।মোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে চারটি প্রজন্মে ভাগ করা যায়। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।
=> প্রথম প্রজন্ম
১৯৭৯ সালে জাপানের NTTC (Nippon Telegraph and Telephone Corporation) প্রথম অটোমেটেড সেলুলার নেটওয়ার্ক চালু করার মাধ্যমে 1G এর সূচনা করে। ১৯৮৩ সালে উত্তর আমেরিকায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথম প্রজন্মের মােবাইল ফোন চালু করা হয় যার নাম ছিল অ্যাডভান্সড মােবাইল ফোন সিস্টেম (AMPS)।
বৈশিষ্ট্য
(১) অ্যানালগ সিগনাল ব্যবহার করে যােগাযােগ স্থাপন করা যায়।
(২) সেল সিগনাল এনকোডিং পদ্ধতি ছিল FDMA।
(৩) কথােপকথন চলা অবস্থায় ব্যবহারকারীর অবস্থানের পরিবর্তন হলে ট্রান্সমিশন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
(৪) সেমিকন্ডাক্টর ও মাইক্রোপ্রসেসর প্রযুক্তির ব্যবহার।
(৫) প্রথম দিকের ফোনগুলো ওজনে বেশি এবং আকারে অনেক বড় ছিলো।
=> দ্বিতীয় প্রজন্ম
১৯৯১ সালে GSM প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে সর্বপ্রথম ইউরােপে দ্বিতীয় প্রজন্মের মােবাইল ফোনের সূচনা হয়। ভয়েসকে Noise মুক্ত করার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের মােবাইল ফোনের আবির্ভাব ঘটে যা Digital AMPS বা D-AMPS নামে পরিচিত। এ সময় CDMA (Code Division Multiple Access) নামে নতুন ডিজিটাল পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটে।
বৈশিষ্ট্য
(১) নেটওয়ার্কের রেডিও সিগন্যাল হিসেবে ডিজিটাল সিস্টেম চালু।
(২) নেটওয়ার্ক GSM এবং CDMA পদ্ধতির ব্যবহার।
(৩) এ প্রজন্মে সর্বপ্রথম প্রিপেইড পদ্ধতি চালু হয়।
(৪) সীমিত মাত্রায় আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা চালু হয়।
(৫) মােবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হয়।
=> তৃতীয় প্রজন্ম
২০০১ সালে জাপানের টেলিযােগাযােগ কোম্পানি NTT DoCoMo প্রথম অ-বাণিজ্যিক ও পরীক্ষামূলক 3G নেটওয়ার্ক চালু করে। তারও আগে ১৯৯২ সালে তৃতীয় প্রজন্ম মােবাইল ফোনের ধারণা শুরু হয় যা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ইউনিয়ন (ITU) কর্তৃক 'Internet Mobile Communication for year 2000' নামে নতুন ধারণার উদ্ভব ঘটায়। তৃতীয় প্রজন্মে ডেটা রূপান্তরের কাজে প্যাকেট সুইচিং-এর বদলে সার্কিট সুইচিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ প্রজন্মের মূল উদ্দেশ্য ছিল উচ্চগতিসম্পন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন।
বৈশিষ্ট্য
(১) ডেটা রূপান্তরের কাজে প্যাকেট সুইচিং ও সার্কিট সুইচিং উভয় পদ্ধতির ব্যবহার।
(২) উচ্চগতিসম্পন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন।
(৩) নেটওয়ার্কে EDGE, GPRS এর অধিক ব্যবহার।
(৪) ডেটা রেট ২ Mbps এর অধিক।
(৫)রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি W-CDMA বা UMTS স্ট্যান্ডার্ড।
(৬) ভিডিও কলের ব্যবহার শুরু ।
(৭) ব্যাপক আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা।
=> চতুর্থ প্রজন্ম
আগামী দিনের মােবাইল ফোন সিস্টেম হলাে চতুর্থ প্রজন্মের মােবাইল ফোন সিস্টেম। ২০০৯ সালে এ প্রজন্মের মােবাইল ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রজন্মের মােবাইল সিস্টেমের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলাে সার্কিট সুইচিং বা প্যাকেট সুইচিংয়ের পরিবর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) ভিত্তিক নেটওয়ার্কের ব্যবহার। ফলে মােবাইল ফোন সিস্টেমে আলট্রা - ব্রড ব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
বৈশিষ্ট্য
(১) মােবাইল ফোন সিস্টেমে আলট্রা-ব্রড ব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।
( ২) ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড 3G এর চেয়ে ৫০ গুণ বেশি।
(৩) প্রকৃত ডেটা ট্রান্সফার রেট সর্বোচ্চ ২০ Mbps
(৪) এ প্রজন্মে ত্রি-মাত্রিক (3D) ব্যবহারিক প্রয়ােগের ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
(৫) এ প্রজন্মের মোবাইলে স্মার্ট এন্টেনা ব্যবহার করা হয়।
মোবাইল ইন্টারনেট হল ওয়াইফাই, মোবাইল ডাটা সংযোগ বা কেবল মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা। আধুনিক সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ একটি জরুরী অংশ হয়ে উঠেছে এবং এটি অত্যন্ত সুবিধাজনক।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন, ইমেল সম্পর্কিত কাজ করতে পারেন, সরাসরি ম্যাসেজিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে অ্যাক্সেস করতে পারেন। আপনি ভিডিও স্ট্রীমিং, গেমিং এবং ডাউনলোড করতে পারেন এবং সাথে সাথে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানো যেতে পারে কিন্তু আপনার ডেটা সীমা দেখে নেওয়া উচিত।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আপনার মোবাইল ডিভাইসে ওয়াইফাই, 3G, 4G এবং 5G মোবাইল ডাটা সংযোগের অপশন থাকতে হবে।
ডায়ালিং কোড হল একটি সংখ্যার কোড, যা ব্যবহার করে আপনি ফোনে কোন নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে পারেন। ডায়ালিং কোডগুলি প্রতিনিয়ত দ্বিতীয় পাশে # চিহ্ন দিয়ে লিখা হয়।
তার মাধ্যম ছাড়া যখন প্রেরক ও গ্রাহকযন্ত্রের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তখন তাকে তারবিহীন বা ওয়্যারলেস মিডিয়া বলে। এটি সম্ভব হয় কারণ বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের জন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না।
Wireless Fidelity শব্দের সংক্ষিপ্ত রুপ Wi-Fi। (Wi-Fi শব্দটি স্বত্বাধিকারী Wi-Fi Alliance নামীয় একটি সংস্থার নির্ধারিত ট্রেডমার্ক) প্রযুক্তিটি বর্তমান সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়্যারলেস প্রযুক্তি যেটা উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারসহ কম্পিউটারের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে ডেটা আদান- প্রদান করে থাকে।
যেকোনো মানের Wi-Fi ডিভাইস পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারে। সে কারণে ডেটার নিরাপত্তার খানিকটা ঝুঁকি থাকে। এটি সাধারণত 2.4 থেকে 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর কভারেজ এরিয়া 50 থেকে 200 মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে এবং ব্যবহার সহজ হওয়ার কারণে একসাথে অনেক ব্যবহারকারী খুব সহজেই এই নেটওয়ার্কে সিগন্যাল জ্যাম তৈরি হতে পারে।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং জগতে ব্লুটুথ হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা স্বল্প দূরত্বের মধ্যে তারবিহীনভাবে দুটি ডিভাইসের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে। ব্লুটুথ নেটওয়ার্কটির ব্যান্ডউইথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে কম হলেও এটি বহুল ব্যবহৃত। যে সব ডিভাইসে এই পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলোকে ব্লুটুথ ডিভাইস বলে। বর্তমানে ল্যাপটপ, ট্যাব, পিডিএ, স্মার্ট ফোনে ব্লুটুথ প্রযুক্তি আগে থেকে দেওয়া থাকে। এছাড়া ইদানীং মাউস, কীবোর্ড, হেডফোন সেট, স্পীকার ইত্যাদিতেও ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।
এটি একটি পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক প্যান ( PAN), 2.45 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর ব্যাপ্তি ৩ থেকে ১০ মিটার হয়ে থাকে। হাফ ডুপ্লেক্স মোডে এর ডেটা ট্রান্সমিশন রেট প্রায় 1Mbps ৰা তারচেয়ে বেশি। এটি স্থাপন করা সহজ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগারেশন করা হয়। ব্লুটুথ নেটওয়ার্ককে পিকোনেটও বলা হয় -এর আওতায় সর্বোচ্চ ৪ (আট) টি যন্ত্রের সাথে সিগন্যাল আদান-প্রদান করতে পারে, এর মধ্যে একটি মাস্টার ডিভাইস এবং বাকিগুলো ব্লেন্ড ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। কতকগুলো পিকোনেট মিলে আবার একটি স্ক্যাটারনেট গঠিত হতে পারে।
WiMAX-এর পূর্ণরূপ হলো World Wide Interoperability for Microwave Access. বহনযোগ্য কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সুবিধাকে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি বলে।
এটি একটি তারবিহীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রযুক্তি। এটি IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক। ২০০১ সালের এপ্রিলে ওয়াইম্যাক্সের জন্ম হয়। বিভিন্ন প্রকার ইন্টারনেট সেবার মধ্যে স্বল্প ব্যয়ে সীমিত আয়তনের এলাকায় ওয়াইম্যাক্স একটি সহজ ও সুবিধাজনক প্রযুক্তি।
ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বা ব্যান্ডউইথ অথবা ডাটা ট্রান্সফার রেট বলতে বুঝায়, এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে প্রতি সেকেন্ডে ডাটা অাদান প্রদানের হারকে ব্যান্ডউইথ বা ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বলে।
উদাহরনসরূপ, একটি ডিভাইসের ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বা ব্যান্ডউইথ ১০ এমবিপিএস বলতে বুঝায় ডিভাইসটি প্রতি সেকেন্ডে ১০ এমবি ডাটা আদান প্রদান করতে পারে।
ওয়েব ডিজাইনঃ ওয়েব ডিজাইন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে ওয়েবপেইজের বাহ্যিক সৌন্দর্য তৈরি করা হয়। অর্থাৎ এই প্রক্রিয়ায় একটি ওয়েবপেইজ বা ওয়েবসাইটের বিভিন্ন লেআউট, রং, গঠন, গ্রাফিক্স এবং ইন্টারেক্টিভ বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারন করা হয়। ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সফটওয়্যার এবং টুলস ব্যবহার করা হয়।
এইচটিএমএল (HTML) হল ওয়েবপেজ তৈরির জন্য বহুল ব্যবহৃত একটি ল্যাংগুয়েজ। HTML এর পূর্ণরূপ হল Hyper Text Markup Language। তবে এটা কোন প্রােগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ নয়। এইচটিএমএল-কে Markup Languageও বলা হয়, যা কতকগুলাে Markup ট্যাগের সমষ্টি আর এই Markup ট্যাগের কাজ হল ওয়েব পেজে বিভিন্ন এলিমেন্ট কিভাবে প্রদর্শন করবে তা নির্দেশ করা যেমন- একটি ওয়েব পেজে টেক্সট, ইমেজ, এনিমেশন, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি এলিমেন্ট থাকতে পারে; আর এই এলিমেন্টগুলাে ওয়েব পেজে প্রর্দশন করা বা কিভাবে প্রর্দশন করবে তা নিধারণ করাই হল মার্কআপ ট্যাগ বা এইচটিএমএল ট্যাগের কাজ।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (সংক্ষিপ্তরূপ দি ওয়েব) হল ইন্টারনেট দিয়ে দর্শনযোগ্য আন্তঃসংযোগকৃত তথ্যাদির একটি ভাণ্ডার। একটি ওয়েব ব্রাউজারের সহায়তা নিয়ে একজন দর্শক ওয়েবপাতা বা ওয়েবপৃষ্ঠা দেখতে পারে এবং সংযোগ বা হাইপারলিঙ্ক ব্যবহার করে নির্দেশনা গ্রহণ ও প্রদান করতে পারে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত হাইপার টেক্সট ডকুমেন্টগুলো নিয়ে কাজ করার প্রক্রিয়া ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব নামে পরিচিত। হাইপার লিংকের সাহায্যে ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে, ওয়েব পৃষ্ঠা দেখা যায়, যা টেক্সট, চিত্র, ভিডিও ও অন্যান্য মাণ্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ হতে পারে। ১৯৮৯ সালের মার্চে ইংরেজ পদার্থবিদ টিম বার্নাস লি, বর্তমানে যিনি ওয়ার্ণ্ড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের ডাইরেক্টর, পূর্ববর্তী হাইপারটেক্সট সিস্টেম হতে ধারণা নিয়ে, যে প্রস্তাবনা লেখেন তা হতেই উপত্তি ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েবের। পরবর্তীতে এ কাজে লি'র সাথে যোগ দেন বেলজিয়ান বিজ্ঞানী রবার্ট কাইলিয়াউ। এসময় তারা উভয়েই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সের্নে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯০ এর ডিসেম্বরে তাদের প্রকাশিত এক প্রস্তাবনায় তারা উল্লেখ করেন,“ হাইপারটেক্সট্-কে লিংক ও ওয়েব হতে নানবিধ তথ্যের সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে একজন ব্যাবহারকারি তার মর্জিমাফিক ওয়েব পরিভ্রমণ করতে পারবে।”
বর্তমান ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে, অন্যান্য ওয়েব সাইট তৈরি হয়েছিল, সারা বিশ্বব্যাপী, ডোমেইন এর নাম ও এইচটিএমল এর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান স্থাপিত হয়েছিল। তখন থেকেই বার্নাস লি ওয়েব স্টান্ডার্ড এর ব্যাপারে তার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন(যেমন, ওয়েব পেই্জ তৈরীতে কোন মার্কআপ ভাষা ব্যবহার করা হবে)। সাম্প্রতিক কালে তিনি আওয়াজ তুলেছেন Semantic ওয়েব এর ব্যাপারে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সহজে ব্যবহার যোগ্য ও সাবলীল পক্রিয়ায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সমূহের প্রসার বা বিস্তৃতি ঘটিয়েছে। আর এভাবেই তারা ইন্টারনেটকে জনপ্রিয় করতে গুরুত্ববহ ভূমিকা রেখেছেন। অনেক সময় সাধারণত এদের অর্থকে গুলিয়ে ফেলা হয় যদিও ইন্টারনেট কখনই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের প্রতিশব্দ নয়। ওয়েব হল মূলত ইন্টারনেটের উপর ভিত্তিকরে গড়ে ওঠা একটা এপ্লিকেশন মাত্র।
Url এর পূর্ণরূপ বা URL full form হল uniform resource locator (ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর) । uniform resource locator এর মানে হল রিসোর্স লোকেট করা অর্থাৎ খোঁজা । এইসমস্ত ইনফরমেশন স্টোর থাকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা www এ তে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে সেই ওয়েব সাইটের উপরে একটি এড্রেস দেখতে পান সেটাই হচ্ছে ইউআরএল । অর্থাৎ ইউআরএল বলতে বোঝায় ওয়েবসাইটের এড্রেস বা ঠিকানা কে ।
প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের আলাদা আলাদা Url থাকে। এই ইউআরএল এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায়। আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ছেন, ঠিক আপনারা কি আর্টিকেলের একদম উপরের দিকে চলে যান এড্রেসবারে একটি লিঙ্ক পাবেন এটাই হচ্ছে ইউআরএল ।
The IP address is a 32-bit number that uniquely identifies a network interface on a machine. An IP address is typically written in decimal digits, formatted as four 8-bit fields separated by periods. Each 8-bit field represents a byte of the IP address.
ডোমেইন হচ্ছে কোন একটা ওয়েবসাইটের নাম যেমন, www.google.com এটি একটি ওয়েব সাইট যা সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তার ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে দেখতে পারে। এখানে তিনটি W হচ্ছে যথাক্রমে world wide web আর google.com হচ্ছে সেই ওয়েব সাইটের মূল নাম। প্রথমত এই ওয়েব সাইটের একটি আইপি এড্রেস থাকে যা প্রত্যেক ওয়েব সাইটের থাকে আপনি চাইলে সেই আইপি আপনার ব্রউজারের এড্রেসবারে দিয়ে ওয়েব সাইটটি দেখতে পারবেন কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনি সব ওয়েব সাইটের আইপি এড্রেস মনে রাখতে পারবেন কিন্তু ডোমেইন নেম থাকলে আপনি তা সহজেই মনে রাখতে পারবেন।
সার্চ ইঞ্জিন একটি সফটওয়্যার টুল যা ওয়ার্ল্ড ওয়াইট ওয়েব থেকে ইনফর্মেশন খুঁজে বের করে । ইন্টারনেটে কোন তথ্য সার্চ করার ফলে সার্চ ইঞ্জিন সেই তথ্য জমিয়ে রেখে বিভিন্ন ওয়েব পেইজ থেকে বাছাই করে তথ্যটি খুঁজে দেয় । সার্চ ইঞ্জিন গুরুত্বপূর্ণ শব্দের সূত্র ধরে ওয়েবসাইট খুঁজে বের করে আর ওয়েব পেজ থেকে কোন কিছু খোঁজাকে সার্চ বলে। খোঁজার কাজটি সু-সম্পন্ন করার জন্য বেশ কিছু সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে।
কোন তথ্য খোঁজার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন ( List of Search Engine) রয়েছে সেগুলো নিম্নরূপ:-
FTP মানে File Transfer Protocol. এই প্রোটোকল আপনাকে ইন্টারনেটের মতো নেটওয়ার্ক জুড়ে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ফাইল স্থানান্তর করতে দেয়। এটি সাধারণত প্রোগ্রামার এবং ওয়েবসাইট ডিজাইনাররা ব্যবহার করে যখন তারা ওয়েব পেজ, স্ক্রিপ্ট, ছবি এবং ওয়েবসাইট তৈরি করে এমন অন্যান্য সামগ্রী আপলোড বা ডাউনলোড করতে চায়। FTP সাধারণ ব্যবহারকারীরাও ব্যবহার করতে পারেন যারা তাদের কম্পিউটারে ইন্টারনেট থেকে বড় ফাইল ডাউনলোড করতে চান।
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার খুব সাধারণ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও অনেকেই হয়ত জানেন না কীভাবে ইন্টারনেটের যুক্ত হওয়া যায়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ইন্টারনেটে কীভাবে যুক্ত হবেন সে সম্পর্কে।
যা যা লাগবে–
১। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার
২। সিমকার্ড, মডেম বা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ
৩। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও অ্যাপস- যেমন ইন্টারনেট ব্রাউজার, মেসেঞ্জার ইত্যাদি
স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হবার উপায়-
১। স্মার্টফোনে সিম কার্ড লাগিয়ে সেই সিম কোম্পানির বিভিন্ন ডাটা প্যাকেজ কিনে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিম কোম্পানির ডাটা প্যাকেজ কীভাবে কিনতে হয় সেসব জানতে হবে। আবার আশেপাশের ফ্লেক্সিলোডের দোকানে এখন মিনিট কার্ডের মত করে ডাটা প্যাকেজের জন্য আলাদা কার্ড পাওয়া যায়। এই কার্ড রিচার্জ করে ডাটা প্যাকেজ নিতে পারবেন। ডাটা প্যাকেজের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে (যেমন- ৩ সপ্তাহ, ১ মাস ,৩ মাস) এবং এই মেয়াদের মধ্যে সেটি ব্যবহার করতে হবে। কারণ মেয়াদের মধ্যে আবার রিচার্জ না করলে অব্যবহৃত ডেটা আর ব্যবহার করা যায় না। মেয়াদ এবং ডাটা শেষ হয়ে গেলে আবারো ডাটা প্যাকেজ কিনতে হবে।
২। ওয়াইফাই (WiFi) ব্যাবহার করেও যুক্ত হতে পারবেন, সেক্ষেত্রে সিমের প্রয়োজন হবে না। তবে সেজন্য বাসায় বা অফিসে যেখানে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ থাকা লাগবে। এলাকাভেদে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার থাকে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলেই সংযোগ দিয়ে যাবে। তবে আপনাকে সংযোগের জন্য একটি রাউটার কিনতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্যাবল কিনতে হবে। ব্রডব্যান্ড কানেকশন নিলে প্রতি মাসে মাসে প্যাকেজ অনুযায়ী বিল (যেমন-পাঁচশত, আটশত, ১ক হাজার টাকা) দিতে হয়।
কম্পিউটারের মাধ্যমে যুক্ত হবার উপায়-
১। সিম কার্ড এবং মডেমের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন।
মডেম এর মাধ্যমেকম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া যায়। এই ডিভাইসে সিম যুক্ত করার জায়গা আছে, সিমে ডাটা প্যাকেজ কিনে তারপর সে সিমকে মডেমে লাগিয়ে কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টে যুক্ত করলেই ইন্টারনেট সংযোগ পেয়ে যাবেন।
২। ওয়াইফাই দিয়ে যুক্ত হতে পারেন
ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিলে ক্যাবলের মাধ্যমে ডেস্কটপ/ল্যাপটপ দুই ধরনের কম্পিউটারেই ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ডেস্কটপে আলাদা অ্যাপডাপ্টার ছাড়া ওয়াইফাই সংযোগ পাওয়া যায় না।
৩। ফোনের হটস্পট দিয়ে যুক্ত হতে পারেন
অনেক সময় বাসার বা অফিসের বাইরে থাকার কারণে ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইফাই এলাকার মধ্যে না থাকা অবস্থাতেও আমাদের অনেক কাজ করতে হতে পারে। সেসব ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে ডাটা প্যাকেজ কিনে বা কারো ফোনে ডাটা প্যাকেজ থাকলে সেই ফোনে ডাটা কানেকশন অন করতে হবে। এরপর ফোনে মোবাইলের সেটিংস অপশনে গিয়ে পোর্টেবল হটস্পট অন করতে হবে। এই হটস্পট অন করার ফলে মোবাইলের নেটওয়ার্কটা কম্পিউটারের কাছে ওয়াইফাইয়ের মত কাজ করবে। হটস্পটে যুক্ত করার জন্য হটস্পটে প্রবেশ করে পাসওয়ার্ডটি দেখে নিবেন। তারপর কম্পিউটারের ওয়াইফাই অন করে এই পাসওয়ার্ড দিয়ে ফোনের হটস্পটের সাথে যুক্ত করে নিলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
ব্রাউজার হলো একটি software application যেটাকে ব্যবহার করা হয় ইন্টারনেটে সক্রিয় website গুলোর ওয়েব সার্ভার এর সাথে সংযোগ স্থাপন করে, ওয়েবসাইট গুলোর কনটেন্ট (content) বা ফাইল (file) গুলোকে search বা access করার ক্ষেত্রে।
যেকোনো ওয়েবসাইটের সার্ভার এর সাথে সংযোগ স্থাপন করে ওয়েবসাইটের file, style, design, web-pages, content ইত্যাদি দেখে নিতে আমাদের সাহায্য করে এই ব্রাউজার।
সাধারণভাবে একটি ডোমেইন এর অধীনে একাধিক ওয়েবপেজের সমষ্টিকে ওয়েবসাইট বলে। প্রথম ওয়েবসাইট তৈরি হয় ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট। আবার ডোমেইনের মাধ্যমে দেখার যোগ্য ওয়েব সার্ভারে জমা রাখা ছবি, অডিও ও ভিডিও ওয়েব পেজ, ডেটাবেজ ফাইল এবং অন্য সকল তথ্যের সমষ্টিকে একসাথে ওয়েবসাইটে বলা হয়। সমস্ত উন্মুক্ত ওয়েবসাইট গুলো কে সমষ্টিগতভাবে World-Wide-Web বা বিশ্বব্যাপী জাল নাম দেওয়া হয়। ওয়েবসাইটে প্রথম ঢুকলে যে পেজটি প্রদর্শিত হয় সেটিকে হোমপেজ বলা হয়। ওয়েবসাইট যেখানে হোস্ট করা হয় তাকে ওয়েবসার্ভার বলা হয়। সারা বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। যে ওয়েবসাইট যে বিষয়ের উপর সে বিষয়ে সার্চ ইঞ্জিনে আমরা সার্চ করলে সার্চ ফলাফলে সেই ওয়েবসাইট লিংক চলে আসে।
“মূলত কমিপউটারের বিভিন্ন অংশের সংযোগ দেওয়া, কম্পিউটারের সঠিক যত্ন নেওয়া, নির্দিষ্ট সময় পরপর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কোন যন্ত্র ঠিক মত কাজ না করলে তার মেরামত, পরিবর্তন ইত্যাদিকে সামগ্রিক ভাবে কম্পিউটারের রক্ষণাবেক্ষণ বলা হয়।”
কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা:
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এখন এই মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশের যদি কোনো মানুষ যত্ন না নেয়, তাহলে কি তার থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে। যেই অংশের যত্নে আপনি ঘাটতি দেখাবেন সেই অংশটিই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আর চিন্তা করুণ কম্পিউটার হচ্ছে সকল ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশের সেরা। সুতরাং এর থেকে ভালো ফল পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর পরিচর্যা করতে হবে। বাইরের বিভিন্ন নিয়ামক যেমন: আদ্রতা, তাপমাত্রা, বিদ্যুত ক্ষেত্র, চুম্বক ক্ষেত্র, ধুলিকণা, ধোঁয়া, পানি ইত্যাদির প্রভাব থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করতে হবে।
সফটওয়ার এর রক্ষনাবেক্ষন বলতে বোঝানো হয় যে এটি যেনো নিরাপদ এ থাকে এবং এটিতে যেন অনুমুতি হীন কেউ প্রবেশ করতে বা এর ব্যবহার করতে না পারে এই বিষয় গুলো নিশ্চিত করা । একই সাথে সফটওয়ার টির কোন ত্রুটি ধরা পড়লে কিংবা হ্যাকিং এর কবলে পড়ে কোন অংশ কাজ না করলে সেটি ঠিক করা ও বোঝায় ।
Computer Security বা কম্পিউটার নিরাপত্তা:
আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি কর্তৃক কম্পিউটারে ব্যবহৃত তথ্যের ক্ষতিসাধন, পরিবর্তন বা গােপনীয়তা ফাসের বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাকে কম্পিউটারের নিরাপত্তা বলে। প্রশাসনিক ও কারিগরি এ দুই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়ােজন হয়। বাইরের ভয় ছাড়াও থাকে কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ (logical) ব্যবস্থার ক্ষতি সাধিত হওয়ার ভয়।
অ্যান্টিভাইরাস (Anti-Virus) বা কম্পিউটার ভ্যাকসিন
এটি একটি প্রােগ্রাম যা কম্পিউটার ভাইরাসকে চিহ্নিত করে, দূরীভূত করে এবং কম্পিউটার সিস্টেমকে ভাইরাস প্রতিরােধী করে তােলে।
কয়েকটি উল্লেখযােগ্য অ্যান্টিভাইরাসের নাম
McAfee, Norton, PC Cllion, Symantec, AVG ইত্যাদি।
Y-2K এর সম্প্রসারিত রূপ Year-2000। Y অক্ষরটি এসেছে বছর (Year) বােঝাতে এবং 2K এসেছে 2000 বােঝাতে। 2000 সাল শুরুর মুহুর্তে সারা বিশ্বে কম্পিউটার বিপর্যয়-এর কারণ ছিল Y-2K।
বাগ (Bug)
বাগ হলাে প্রােগ্রামিং ত্রুটি কম্পিউটারে প্রােগ্রাম তৈরির সময় এতে বিভিন্ন ত্রুটির ফলে ভুল ফলাফল প্রদান করতে পারে। কম্পিউটারের এ ধরনের ক্রটিকে Bug বলা হয়।
কম্পিউটারে দেয়া অপ্রয়ােজনীয় ইনফরমেশনকে বলে গিরিশ।
ফায়ারওয়াল (Firewall)
অনির্দিষ্ট (Unauthorized) বা অবাঞ্চিত ব্যবহারকারীর (Intruder) হাত হতে সিস্টেম রক্ষা করা বা সাইবার আক্রমণ এড়াতে ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা হয় । ফায়ারওয়ালকে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একটি সিস্টেম হিসেবে গণ্য করা হয় যার সাহায্যে ব্যবহারকারীকে সংরক্ষিত কোন নেটওয়ার্কে প্রবেশ করার অনুমতি প্রদান করা কিংবা বাধা প্রদান করা হয়। ফায়ারওয়াল প্রটেক্টেড সিস্টেমে সাধারণত নেটওয়ার্কের ভিতর থেকে বাহিরের সবকিছু ব্যবহার করা যায়, তবে অন্য কোন অনির্দিষ্ট ব্যবহারকারী এই নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে না। শুধুমাত্র বৈধ ব্যবহারকারীগণ এটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ কোন একটি ওয়েবসাইট সেই সব ডােমেইন বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে যারা এর সাথে চুক্তিবদ্ধ।
ভাইরাস এর পূর্ণরূপ হচ্ছে—Vital Information Resources Under Seize. কম্পিউটার ভাইরাস কোনাে জীবাণু নয়। এগুলাে প্রােগ্রাম প্রস্তুতকারী কর্তৃক তৈরি এক প্রকার প্রােগ্রাম, যা কম্পিউটার সিস্টেমে জমা করে রাখা সফটওয়্যার বা উপাত্তকে (data) ধ্বংস করে দেয়। ফলে কম্পিউটার যথাযথভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়। কম্পিউটার ভাইরাস ফ্লপি ডিস্ক, পেনড্রাই, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ায়। কয়েকটি উল্লেখযােগ্য ভাইরাসের নাম-Aids, Bye Bye, Bad Boy, Cindrella, CIH, I Love You ইত্যাদি।
কম্পিউটার ভাইরাস কাজ করে যেভাবে
কম্পিউটার ভাইরাস হলাে এক ধরনের ক্ষতিকর প্রােগ্রাম (Malware) যা কম্পিউটারে রক্ষিত ডেটা ও অন্যান্য সফটওয়ার এবং অপারেটিং সিষ্টেমের ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া কমিম্পউটারে ভাইরাস ইন্টারনেটের গতিকে মন্থর করে দেয় ও নেটওয়ার্কের জ্যাম সৃষ্টি করে। কম্পিউটার ভাইরাস সাধারণত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরােধে ব্যবহার করা হয় এমন সফটওয়্যার হলাে:
(১) Kaspersky
(২) Norton Antivirus ও
(৩) AVG
সিআইএইচ (CIH) ভাইরাস
সিআইএইচকে মাদার অব অল ভাইরাস বলা হয়। এটি হার্ডডিস্ক ও ফাশ বায়ােস উভয় ভিভাইসকেই অচল করে দেয়। ইন্টারনেট ডাউনলােডিং, ই-মেইল এটাচমেন্ট, পাইরেটেড সফটওয়ার ব্যবহার, ভাইরাস আক্রান্ত নেটওয়ার্ক সার্ভার ইত্যাদির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়াতে পারে। এ ভাইরাস EXE ফাইলে ইফেক্ট করার মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে তবে নির্দিষ্ট কিছু টিগারিং তারিখে ভয়ঙ্কর রূপ লাভ করে। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল এ ভাইরাস আঘাত করেছিল একবার যার ফলে চেরনােবিলে মর্মান্তিক তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এজন্য এ তারিখে আঘাতকারী CIH কে চেরনােবিল ভাইরাস বলে।
CIH ভাইরাসকে মাদার অব অল ভাইরাস বলা হয়।
অ্যান্টিভাইরাস হচ্ছে একধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা আমাদের কম্পিউটার সিস্টেমের ভাইরাস রোধ করতে সাহায্য করে থাকে। এটা মুলত ভাইরাস সনাক্ত এবং রিমুভ করতে অনেক বড় একটা ভুমিকা রাখে। এছাড়া ও আরো নানা ধরনের কাজ করে থাকে একটা অ্যান্টিভাইরাস।
এক কথায় বলতে গেলে, কম্পিউটারের ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে যে প্রোগ্রাম কাজ করে, সেটাই অ্যান্টিভাইরাস।
বাজারে নানা ধরনের অ্যান্টিভাইরাস রয়েছে, অনেক গুলো রয়েছে ফ্রি আবার অনেক গুলো পেইড।
কয়েকটি অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামের নাম নিচে দেয়া হল:
সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপরাধ (Cyber Crime) এমন একটি অপরাধ যা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত।
যে কোনো ধরনের ক্রাইম বা অপরাধ যখন অনলাইন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘটে, তখন তাকে সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ বলে।
সাইবার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম এর নমুনা ঃ
১। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি : ফেসবুকে সাইবার ক্রাইম এখন মামুলি বিষয় হয়ে গিয়েছে। আপনি ফেসবুকে বা সামাজিক গণমাধ্যমে সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে যখন আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন :
**সাইবার বুলিং- কেউ যদি অনলাইনে আপনাকে অহেতুক জ্বালাতন করে এবং আপনার সম্মানহানি করার চেষ্টা করে অথবা অনলাইনে যেকোনো উপায়েই হোক কেউ যদি আপনাকে উত্যক্ত করে তাহলে তা সাইবার বুলিং হিসেবে স্বীকৃত। সেক্ষেত্রে তা যদি অনলাইনে হয় তাহলে আপনি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
** মানহানি - আপনার আর আপনার প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার জন্য কেউ যদি উঠে পড়ে লাগে এবং সেক্ষেত্রে তা যদি অনলাইনে হয় তাহলে আপনি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
**আইডি হ্যাক- আপনার ফেসবুক আইডি কেউ যদি হ্যাক করে থাকে আর আপনার ব্যক্তিগত ছবি আর কথোপকথন অনলাইনে ছেড়ে দেবে বলে যদি হুমকি প্রদান করে, পাশাপাশি তা ঠেকানোর জন্য তার বিনিময়ে যদি সে আপনার কাছে অর্থ দাবি করে সেক্ষেত্রে আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
**সেক্সুয়ালি এবিউজ- কেউ যদি অনলাইনে আপনার ছবি দিয়ে কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আইডি খুলে, আপনার ছবি ব্যবহার করে কোনো পোস্ট প্রদান করে। আপনার ছবির সাথে অন্য ছবি জোড়া লাগিয়ে বিতর্কিত কিছু বানোয়াট খবর প্রকাশ করে, আপনার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করে, পাশাপাশি তা ঠেকানোর জন্য তার বিনিময়ে যদি সে আপনার কাছে অর্থ দাবি করে সেক্ষেত্রে আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
**হ্যাকিং- অনলাইনে ডাটা বা তথ্য অনুমতিবিহীন চুরি, ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন করার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় হ্যাকিং। এতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরি হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম ক্ষুন্ন হয়।
হ্যাকিং হলো কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা কে খুঁজে বার করে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার অনুমতি ছাড়া কম্পিউটার সিস্টেমের এক্সেস নেওয়া বা সিস্টেমে প্রবেশ করে ব্যক্তিগত তথ্য দেখাবে চুরি করাকে হ্যাকিং বলে।
হ্যাকিং প্রধানত 7 প্রকার । নিচে বিস্তারিত হ্যাকিং এর প্রকারভেদ গুলো আলোচনা করা হবে।
1. ওয়েবসাইট হ্যাকিং (website hacking)
নাম শুনে হয়ত বুঝতে পারছেন ওয়েবসাইট হ্যাকিং মানে ওয়েবসাইট হ্যাক করা । হ্যাকাররা ওয়েবসাইট টি হ্যাক করে ওয়েবসাইটটি পুরোপুরি নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নেয় এবং যা খুশি তাই পোস্ট করতে পারে এবং আপনার মালিকানা পরিবর্তন করতে পারে।
2. নেটওয়ার্ক হ্যাকিং (network hacking)
নেটওয়ার্ক হ্যাকিং মানে হচ্ছে নেটওয়ার্ক হ্যাক করা। উদাহরণস্বরূপ কোন কোম্পানি বা সরকারি অফিসের অনেকগুলো কম্পিউটার থাকে প্রত্যেকটি কম্পিউটার একটি লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকে ওই local area network কে হ্যাক করা হচ্ছে নেটওয়ার্কিং হ্যাকিং এর ফলে নেটওয়ার্ক এর উপরে হ্যাকাররা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করে। Network হ্যাক করার জন্য মূলত অনেক ধরনের টুল ব্যবহার করা হয়।
3. এথিক্যাল হ্যাকিং (ethical hacking)
কোন কোম্পানির সিস্টেম সিকিউরিটি গুলোকে আরো secure করার জন্য মূলত হ্যাকাররা hack করে থাকে আর এটি পুরোপুরি legal । কম্পিউটার সিস্টেমের কোন জায়গায় গন্ডগোল আছে কিনা না বা কোন সমস্যা আছে কিনা এটি দেখাশোনার কাজ হল ethical হ্যাকারদের কারণ কোন Black Hat Hackers যেনো কম্পিউটার সিস্টেমকে hack না করতে পারে।
4. পাসওয়ার্ড হ্যাকিং (password hacking)
অনেক ধরনের টুলস এর সাহায্যে সিস্টেম এর পাসওয়ার্ড খুঁজে বের করা হলো পাসওয়ার্ড হ্যাকিং। তারা চাইলে সেই পাসওয়ার্ডটি চেঞ্জ করে নিজের ইচ্ছামত পাসওয়ার্ড দিয়ে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
5. ই-মেইল হ্যাকিং (email hacking)
আপনারা অনেকেই শুনে থাকেন যে ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক তো এই কাজটি মূলত ই-মেইল হ্যাকিং এর মাধ্যমে করে থাকে। কারোর ইমেইল হ্যাক করে মেইল চুরি করা বা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে ই-মেইল হ্যাকিং। হ্যাকাররা ইমেইল হ্যাক করে ওই ইমেইল পুরোপুরি নিজের কন্ট্রোলে করে নেয় ইমেইলের পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দেন যাতে কেউ access করতে না পারে।
6. মোবাইল হ্যাকিং (mobile hacking)
কারোর মোবাইল হ্যাক করা হচ্ছে মোবাইল হ্যাকিং। হ্যাকাররা মোবাইল হ্যাক করে ব্যক্তিগত তথ্য বা ডেটা হাতিয়ে নিয়ে । অনেক সময় হ্যাকাররা ইমেইল বা মেসেজে লিংক পাঠায় সেই লিংকে ক্লিক করলে কিন্তু আপনার মোবাইলের হ্যাকাররা নিয়ে নেবে।
7. কম্পিউটার হ্যাকিং (computer hacking)
এই ধরনের হ্যাকিং এর অর্থ হল হ্যাকাররা কম্পিউটার সিস্টেমকে hack করে কম্পিউটারের সমস্ত ডেটা চুরি করে নেয় বা নষ্ট করে দেয়। হ্যাকাররা বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার , ভাইরাসের মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেমকে করে।
লেখক, শিল্পীসহ সৃজনশীল কর্মীদের নিজেদের সৃষ্টকর্মকে সংরক্ষণ করার অধিকার দেওয়া কপিরাইট আইনের লক্ষ্য। সাধারণভাবে একটি মুদ্রিত পুস্তকের কপিরাইট ভঙ্গ করে সেটি পুনর্মুদ্রণ করা যথেষ্ট ঝামেলাপূর্ণ ও ব্যয়বহুল; কিন্তু কম্পিউটারের যে কোনো কিছুর ‘কপি’ বা ‘অবিকল প্রতিলিপি’ তৈরি করা খুবই সহজ কাজ। এ কারণে কম্পিউটার সফটওয়্যার, কম্পিউটারে করা সৃজনশীল কর্ম যেমন—সিনেমা, নাটক, এনিমেশন ইত্যাদির বেলায় কপিরাইট সংরক্ষণ করার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হয়। যখনই এরূপ কপিরাইট আইনের আওতায় কোনো কপিরাইটহোল্ডারের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়, তখনই কপিরাইট বিঘ্নিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এই ধরনের ঘটনাকে সাধারণভাবে পাইরেসি বা সফটওয়্যার পাইরেসি নামে অভিহিত করা হয়।
কম্পিউটার সিস্টেমের বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যারসমূহ রক্ষণাবেক্ষণের পদ্ধতিকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ।
মাইক্রোকম্পিউটারের প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্য সফটওয়্যারগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন যথার্থ ও সঠিক হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। সামঞ্জস্যপূর্ণ হার্ডওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্যান্য সফটওয়্যার পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কম্পিউটারের স্পিড অনেকাংশে নির্ভর করে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের ওপর। অধিকাংশ মাইক্রোকম্পিউটার সিস্টেমকেই নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে দ্রুত নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবহারব্যবস্থাটি কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন হার্ডওয়্যারকে ডেটা নষ্ট বা হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে সুচারুভাবে পরিচালনা করতে হলে সঠিকভাবে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। সঠিকভাবে হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণের ফলে কম্পিউটার সহজে নষ্ট হয় না, বেশিদিন নিরাপদে চলে, কম্পিউটার পরিচালনার মোট খরচ কমে যায়, উপাত্তসমূহ সহজে হারিয়ে যায় না এবং আনুষঙ্গিক হার্ডওয়্যার যন্ত্রপাতিসমূহ বেশিদিন টিকে থাকে। একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারসমূহকে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বা নিয়ামকগুলোর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে।
১. ধুলাবালি মুক্ত পরিবেশঃ কম্পিউটারকে ভালো রাখতে হলে ধুলাবালি মুক্ত পরিবেশে কম্পিউটার ব্যবহার করতে হবে। কেননা ধুলাবালি কম্পিউটারের মাদার বোর্ডেসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশের ক্ষতি করে থাকে। সার্কিটের উপর ধুলাবালি জমে শর্ট সার্কিট সৃষ্টি হয়। এছাড়া তাপ অপসারণ ক্ষমতা কমে যায়। অনেক সময় সার্কিট অচল বা নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ ধুলাবালি। ধুলাবালি মুক্ত পরিবেশের জন্য যা করতে হবে তাহলো-
২. সঠিক বৈদ্যুতিক পরিবেশঃ কম্পিউটার ভালো রাখতে হলে সঠিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যুৎ এর ভোল্টেজ উঠা-নামা, ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ, লোডশেডিং ইত্যাদি কম্পিউটারের জন্যে খুবই ক্ষতিকর। কম্পিউটারের সঠিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে-
৩. পোকা মাকড় থেকে সাবধান থাকাঃ পিঁপড়ে, তেলাপোকা এবং অন্যান্য পোকামাকড় কম্পিউটারের মধ্যে বাসা বাঁধতে পারে। ফলে শর্ট সার্কিটসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এরা তার কেটে ফেলতে পারে। এদের হাত থেকে বাঁচতে হলে-
৪. পরিষ্কারকরণঃ নির্দিষ্ট সময় পর পর কম্পিউটারের মাদারবোর্ড ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে ব্রাশ বা সুবিধা মত জিনিস দিয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করতে হবে। নিজে না পারলে কম্পিউটার মেরামতের দোকানে বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিতে হবে। কম্পিউটার পরিষ্কার থাকলে এর কাজের গতি বৃদ্ধি পায় এবং যন্ত্রাংশ ভালো থাকে।
৫. ল্যাপটপের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্নঃ ডেস্কটপের তুলনায় ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের কিছু বিশেষ যত্ন নিতে হয়। যাতে ল্যাপটপের কার্যকারিতা ঠিক থাকে। এজন্য যা করতে হবে-
কম্পিউটারের স্থায়ীত্ব বাড়ানোর জন্য এবং এর কার্যকারিতা ঠিক রাখার জন্য এগুলো মেনে চলা উচিত। এতে কম্পিউটার যেমন ভালো থাকবে তেমনি ব্যবহারকারীও ঝামেলামুক্তভাবে কাজ করতে পারবে।
ট্রাবলশুটিং হচ্ছে কম্পিউটার সমস্যার উৎস বা উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ের প্রক্রিয়া। কম্পিউটার ছাড়াও অন্য সব ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রেই ট্রাবলশুটিং করতে হয়। ট্রাবলশুটিং প্রক্রিয়ায় কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয় এবং পাশাপাশি সমাধান দেওয়া থাকে। কম্পিউটার ব্যবহারকারী সমস্যার ধরন অনুযায়ী সমস্যাটি সমাধান করতে পারে। জটিল সমস্যার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
অন্যান্য যেকোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রের তুলনায় কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের ট্রাবলশুটিং একটু বেশিই প্রয়োজন হয়। তাই কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কিছু সাধারণ ট্রাবলশুটিং সম্পর্কে ধারণা থাকা খুবই জরুরী। গুরুত্বপূর্ণ কিছু ট্রাবলশুটিং হলো—
১. সিস্টেম চালু হচ্ছে না—মেইন পাওয়ার ক্যাবলের সংযোগটি টিলে কিনা দেখতে হবে। ঢিলে হয়ে থাকলে ঠিক করে লাগাতে হবে।
২. সিস্টেম সঠিকভাবে চলছে; কিন্তু মনিটরে কিছু দেখা যাচ্ছে না—এ অবস্থায় সিস্টেমটি বন্ধ করে দিতে হবে এবং মেইন সিস্টেম থেকে পাওয়ার কেবলটি খুলে ফেলতে হবে। মেমোরি স্লট থেকে সব র্যাম সরিয়ে ফেলতে হবে এবং একটি ইরেজার দিয়ে র্যামের কানেক্টরগুলো ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।
৩. সিস্টেম অত্যন্ত গরম হয়ে যায় এবং অস্বাভাবিকভাবে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়—কেসিংটি খুলে হার্ডডিস্ক এবং ফ্যানটিকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফের ইনস্টল করতে হবে।
৪. কি-বোর্ড কাজ করছে না—কম্পিউটার বন্ধ করে কি-বোর্ডটি পোর্টের সঙ্গে যথাযথভাবে সংযোগ করা আছে কি না দেখতে হবে, না থাকলে কিংবা লুজ থাকলে ভালোভাবে সংযোগ দিয়ে আবার কম্পিউটার চালু করে দেখতে হবে।
৫. মাউস কাজ করছে না—কম্পিউটারের সঙ্গে মাউসের কেবল সংযোগ ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। না থাকলে মাউসটি ভালোভাবে লাগিয়ে পুনরায় পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কাজ না হলে অন্য একটি ভালো মাউস পোর্টে লাগাতে হবে।
৬. মনিটরে কোনো পাওয়ার নেই—পাওয়ার চালু আছে কি না দেখতে হবে।
সাধারণত হার্ডওয়্যার সম্পর্কিত সমস্যার ক্ষেত্রে ট্রাবলশুটিং কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
সাইবার আক্রমণ হল সাইবার অপরাধীদের দ্বারা একটি একক বা একাধিক কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে এক বা একাধিক কম্পিউটার ব্যবহার করে শুরু করা আক্রমণ।
সাইবার হুমকি সাধারণত কয়েকটি ভাগে বিভক্ত সেগুলো হলো-
অ্যাটাকস অন কনফিডেনশিয়ালি: এটি দ্বারা সাধারণত কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য চুরি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি করা বোঝায়। অনেক সাইবার ক্রিমিনাল বা আক্রমণকারীরা এসব তথ্য সংগ্রহ করে এবং অন্যদের ব্যবহার করার জন্য একটি ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করবে। অ্যাটাকস অন ইনটেগ্রিটি: এটি দ্বারা সাধারণভাবে বোঝায় ব্যক্তিগত বা এন্টারপ্রাইজ তথ্য চুরি করা। এটি একটি সাইবার ক্রিমিনাল অ্যাক্সেস এবং প্রকাশ্যে তথ্য প্রকাশ করা এবং যেই সংস্থার তথ্য চুরি করছে সেই সংস্থার ওপর বিশ্বাস হারানোর জন্য জনগণকে প্রভাবিত করা। অ্যাটাকস অন অ্যাভেইলেবিলিটি: এই ধরনের সাইবার অ্যাটাকের লক্ষ্য হলো ব্যবহারকারীদের নিজস্ব ডেটা বা অ্যাক্সেস চুরি করা এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি বা মুক্তিপণ না দেওয়া পর্যন্ত ব্যবহারকারীর তথ্যগুলো অবরুদ্ধ করে রাখা। ম্যালওয়ার: ম্যালওয়ার দিয়ে সাধারণত অনেক হ্যাকারই ইন্টারনেটে ব্যবহৃত অ্যাপ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট বা লিংক দিয়ে ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করে যাচ্ছে।
ভালনারিবিলিটি: ভালনারিবিলিটি মানে হলো কোনো কোড বা সার্ভারে সমস্যা থাকা। এই ভালনারিবিলিটিজনিত কোনো সমস্যা ব্যবহারকারীর ওয়েবসাইটে থাকলে হ্যাকারদের রাস্তা সহজ হয়ে যায় তথ্য চুরি করার জন্য।
ফিশিং: কোনো ব্রাউজার ওপেন করার পরে ব্যবহারকারী যখন কেনো সাইটে লগইন করার জন্য ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তখন ব্যবহারকারীর দেওয়া ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দ্বারা হ্যাকারের কাছে ব্যবহারকারীর সমস্ত ইনফরমেশন চলে যায়।
ব্যাকডোর: ব্যাকডোর বলতে পেছনের দরজা বোঝানো হয়। ব্যবহারকারী অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য ডাউনলোড করেন। তখনি সেসব লিংকে হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
সাইবার সিকিউরিটি হচ্ছে কোনো সাইবার অ্যাটাক থেকে নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং প্রোগ্রামগুলো সুরক্ষিত ও পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া। এটি মূলত বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস এবং সার্ভিস (যেমন: কম্পিউটার সিস্টেম, নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার এবং ইউজার ডাটা)-এর সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত প্রসেস এবং টেকনোলজি।
সাইবার সিকিউরিটির রয়েছে বেশ কিছু ধরন। সেগুলো হলো :
১. নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি: এটি হলো আক্রমণকারী বা সুবিধাবাদী ম্যালওয়্যার ও অনুপ্রবেশকারীদের বা হ্যাকারের কাছ থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত করার অনুশীলন।
২. অ্যাপলিকেশেন সিকিউরিটি: এটি সফ্টওয়্যার এবং ডিভাইসগুলোকে হুমকি থেকে মুক্ত রাখে। এটি অ্যাপ্লিকেশন সুরক্ষার জন্য ডিজাইন করা একটি সিকিউরিটি সিস্টেম।
৩. ইন্টারনেট সিকিউরিটি: ইন্টারনেটে ব্রাউজারগুলোর মাধ্যমে প্রেরিত এবং প্রাপ্ত তথ্যের সুরক্ষা। সেই সঙ্গে ওয়েব-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সঙ্গে ইন্টারনেট সিকিউরিটিও জড়িত।
৪. ইনফরমেশন সিকিউরিটি : এটি স্টোরেজ এবং ট্রানজিট উভয়ই ডেটার অখণ্ডতা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করে।
৫. অপারেশনাল সিকিউরিটি: এটি ডেটা সম্পদ পরিচালনা এবং সুরক্ষার জন্য একটি প্রক্রিয়া। কোনো নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেস করার সময় ব্যবহারকারীর অনুমতি এবং পদ্ধতি কীভাবে কোথায় কোথায় সংরক্ষণ করা বা ভাগ করা যায় সেগুলো এটি করে থাকে।
৬. ক্লাউড সিকিউরিটি: সরাসরি ইন্টারনেটে সংযোগের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অ্যাপ্লিকেশন, ডেটা এবং তাদের পরিচয় ক্লাউডে ট্রান্সফার করে থাকেন এবং প্রচলিত সুরক্ষা স্ট্যাক দ্বারা সুরক্ষিত নয় প্রোটেকটেড ক্লাউড সুরক্ষা সফটওয়্যার হিসেবে এ পরিষেবা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন এবং পাবলিক ক্লাউডের ব্যবহার সুরক্ষিত করতে সহায়তা করতে পারে। ক্লাউড সুরক্ষার জন্য একটি ক্লাউড-অ্যাক্সেস সুরক্ষা ব্রোকার, সুরক্ষিত ইন্টারনেট গেটওয়ে এবং ক্লাউড-ভিত্তিক ইউনিফাইড হুমকি পরিচালন ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭.এন্ডপয়েন্ট সিকিউরিটি: এটা ডিভাইস স্তরে সুরক্ষা সরবরাহ করে। এন্ড-পয়েন্ট সুরক্ষার মাধ্যমে সুরক্ষিত হতে পারে এমন ডিভাইসে যেমন সেল ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপ কম্পিউটার ইত্যাদি। এন্ড-পয়েন্টের সুরক্ষা আপনার ডিভাইসগুলোকে ম্যালিসিয়াস নেটওয়ার্কগুলোতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখবে যেন আপনি সুরক্ষিত থাকেন।
৮. ডেটা সিকিউরিটি: ডেটা সিকিউরিটি হলো ডিজিটাল তথ্যকে তার পুরো জীবনের সব অননুমোদিত প্রবেশ, দুর্নীতি বা চুরি থেকে রক্ষা করা এবং ডেটাগুলো কীভাবে ব্যবহার হয়, সেটাতে নজর রাখা ইত্যাদি।
ফায়ার ওয়াল হল এক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডাটা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দুই নেটওয়ার্কের মাঝে এই ফায়ারওয়াল থাকে। যাতে এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে কোন ডাটা পরিবাহিত হলে সেটিকে অবশ্যই ফায়ারওয়াল অতিক্রম করতে হয়।
দুই বা ততোধিক কম্পিউটারকে কোনো উপায় ব্যবহার করে যুক্ত করে দিলে তাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক(Computer Network) বলে। এর ফলে একটি কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান-প্রদান ( Data Transfer ) করা যায়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে সাধারণত ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
PAN:- ব্যক্তিগত পর্যায় যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে Personal Area Network বা PAN বলা হয়। পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে সাধারণত দুটি কম্পিউটারের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ক্যাবল বা তার অথবা ব্লু-টুথ এর মাধ্যমে PAN(প্যান) তৈরি করা হয়।
LAN :- Local Area Network কে সংক্ষেপে ল্যান (LAN) বলা হয় । একই বিল্ডিং এর মাঝে কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network) বলে। এই ধরনের নেটওয়ার্ক গঠন করা খুব সহজ। এতে ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহের দাম খুব কম । LAN নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত ডিভাইস সমুহ হল হাব, সুইচ , রিপিটার । বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, ছোট-মাঝারি অফিস-আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN ই ব্যবহার করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য থাকে ডিভাইসসমূহের পরস্পরের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত এবং রিসোর্স শেয়ার করা।
MAN :- মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক (Metropolitan Area Network), একে সংক্ষেপে ম্যান (MAN) বলা হয় । একই শহরের মধ্যে অবস্থিত কয়েকটি ল্যানের সমন্বয়ে গঠিত নেটওয়ার্ককে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (MAN)। এ নেটওয়ার্ক ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ড হতে পারে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এ ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো হলো রাউটার, সুইজ, মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা ইত্যাদি।
WAN :- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wide Area Network), একে সংক্ষেপে ওয়্যান (WAN) বলা হয় । দূরবর্তী ল্যানসমূকে নিয়ে যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠে তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। সাধারণত দেশের মধ্যে অথবা পৃথিবী জুড়ে এই ধরনের নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়।
'ক্লাউড' শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোনো ব্যবহারকারী পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সুবিশাল তথ্যভান্ডার দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার এবং সংরক্ষণ করতে পারেন। আমরা বর্তমানে যারা কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের প্রায় সবারই Facebook, E-mall বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট রয়েছে। আমরা ইচ্ছানুযায়ী এসব একাউন্টের মাধ্যমে স্টেটাস দিচ্ছি কিংবা মেইল আদান-প্রদান করে থাকি। এসব সেবা গ্রহণের জন্য আমাদেরকে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। কেননা, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এইসব সার্ভিস বা সেবা প্রদানকারী বেশকিছু কোম্পানীর বিগলু সংখ্যক সার্ভার রয়েছে, যার মাধ্যমে ভারা অসংখ্য ক্লায়েন্টকে একই সময়ে সার্ভিস প্রদান করে যাচ্ছেন। আবার কিছু সংখ্যক সার্ভিস রয়েছে যেগুলো অর্থের বিনিময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা দান করে থাকেন। বিনামূল্যের এবং অর্থের বিনিময়ে উভয় প্রকার সার্ভিস ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে কম্পিউটার রিসোর্স যেমন- হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকে, ক্রেতা বা ব্যবহারকারী নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভিসদাতা সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কম্পিউটিংয়ের কাজ সমাধা করে থাকে। ক্লাউড কম্পিউটিংকে সমন্বিত টেকনোলজি হিসেবে গণ্য করা হয়, যার দ্বারা ব্যবহারকারী এবং সার্ভিস প্রদানকারী উভয়ই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন।
ক্লাউড কম্পিউটিং পদ্ধতিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
প্রাইভেট ক্লাউড (Private Cloud) : একক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় কিংবা থার্ড পার্টির ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় যাতে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, এ ধরনের ক্লাউডকে প্রাইভেট ক্লাউড বলে। এ সব পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, তবে অনেক বড়ো প্রতিষ্ঠানের অনেক শাখায় ডেটা সেন্টার না বসিয়ে একটিমাত্র ক্লাউড ডেটা সেন্টার স্থাপন করলে প্রতিষ্ঠানটির জন্য সাশ্রয়ী হয়।
পাবলিক ক্লাউড (Public Cloud) : জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ক্লাউডকে পাবলিক ক্লাউড বলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত সকলের বিনামূল্যে বা স্বল্প ব্যয়ে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত অ্যাপ্লিকেশন, স্টোরেজ এবং অন্যান্য রিসোর্স ইত্যাদির সার্ভিসযুক্ত ক্লাউড-ই পাবলিক ক্লাউড। Amazon, Microsoft এবং Google ইত্যাদি তাদের নিজস্ব ডেটা সেন্টারে পাবলিক ক্লাউডের অবকাঠামো স্থাপন ও পরিচালনা করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
হাইব্রিড ক্লাউড (Hybrid Cloud) : দুই বা ততোধিক ধরনের ক্লাউড (প্রাইভেট, পাবলিক বা কমিউনিটি) -এর সংমিশ্রণই হলো হাইব্রিড ক্লাউড। বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড পৃথক বৈশিষ্ট্যের হলেও এক্ষেত্রে একই সাথে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে। ক্লাউড সার্ভিসের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য একাধিক ক্লাউডকে একীভূত করা হয়ে থাকে।
মডেম (মড্যুলেটর-ডিম্যুলেটর) হল একটি যন্ত্র যা একটি প্রেরিত এনালগ সংকেতকে ডিজিটাল তথ্যে রূপান্তর করে এবং ডিজিটাল তথ্যকে পাঠানোর সময় এনকোড করে এনালগ সংকেত হিসেবে প্রেরণ করে। এর উদ্দেশ্য হল সহজে সংকেত পাঠানো এবং তা আবার একই রকমভাবে অন্য প্রান্তে পাওয়া।
যে হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলো কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোকে নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়, তাকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস বলে।
অর্থাৎ কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য যেসকল যন্ত্রাংশ একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে, সেসকল যন্ত্রাংশকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস বলে।
নেটওয়ার্ক ডিভাইসের প্রকার
যে ডিভাইসের সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রীয়ভাবে যুক্ত থাকে তাকে হাব বলে। হাবের মধ্যে অনেক পোর্ট থাকে। একটি হাবে কতগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা হাবের পোর্টের সংখ্যার উপর নির্ভর করে। অধিকাংশ হাব ৪ পোর্ট, ৮ পোর্ট এবং ১৬ পোর্ট বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
একটি হাব ডিজিটাল এবং এনালগ উভয় ডেটার সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ইনকামিং ডেটা ডিজিটাল ফর্ম্যাটে হয়, হাবকে অবশ্যই প্যাকেট হিসাবে এটি পাস করতে হবে। যাইহোক, যদি ইনকামিং ডেটা অ্যানালগ হয়, তাহলে হাব এটিকে সংকেত আকারে পাস করে।
হাবের প্রকারভেদ
সক্রিয় হাব:
সক্রিয় হাবগুলোর নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে এবং নেটওয়ার্কের সাথে সিগন্যালটি ক্লিন, বুস্ট এবং রিলে করতে পারে। এটি রিপিটারের পাশাপাশি তারের কেন্দ্র উভয় হিসেবে কাজ করে। নোডের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
নিস্ক্রিয় হাব:
নিস্ক্রিয় হাব ডেটা সিগন্যালকে একই ফরম্যাটে ফরোয়ার্ড করে। এটি কোনও ভাবেই ডেটা সিগন্যালকে পরিবর্তন করে না। নিস্ক্রিয় হাব যা নোডগুলো থেকে তারের সংগ্রহ করে এবং সক্রিয় হাব থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই হাবগুলো সিগন্যালকে ক্লিন, বুস্ট না করেই নেটওয়ার্কে রিলে করে এবং নোডের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যায় না।
হাবের সুবিধা:
১। তুলনামূলকভাবে দাম কম।
২। বিভিন্ন মিডিয়ামকে সংযুক্ত করতে পারে।
হাবের অসুবিধা:
১। নেটওয়ার্কে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।
২। ডেটা আদান-প্রদানে বাধার সম্ভাবনা থাকে।
৩। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব হয় না।
হাব এর ন্যায় সুইচও একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে LAN ডিভাইসও বলা হয়। যার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। একটি সুইচে কতোগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা সুইচের পোর্ট সংখ্যার উপর নির্ভর করে। সুইচে পোর্টের সংখ্যা ৮, ১৬,২৪ থেকে ৪৮ পর্যন্ত হতে পারে। LAN তৈরির ক্ষেত্রে হাবের চেয়ে সুইচ বেশি ব্যবহৃত হয়। স্টার টপোলজির ক্ষেত্রে সুইচ হচ্ছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস।
হাবের সাথে সুইচের পার্থক্য হলো হাব প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত সকল পোর্টে পাঠায় কিন্তু সুইচ প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত কম্পিউটারের MAC অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নির্দিস্ট পোর্টে পাঠিয়ে দেয়। ফলে সুইচ ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের ডেটা আদান-প্রদানে বাধা বা কলিশনের সম্ভাবনা থাকে না।
সুইচের সুবিধা:
১। ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বাধার সম্ভাবনা নেই।
২। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব।
৩। দুর্বল হয়ে পড়া সংকেত বর্ধিত করে গন্তব্যে প্রেরণ করে।
সুইচের অসুবিধা:
১। হাবের তুলনায় মূল্য কিছুটা বেশি।
২। কনফিগারেশন তুলনামূলকভাবে জটিল।
ব্রিজ একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস যা একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ককে ছোট ছোট সেগমেন্টে বিভক্ত করে। এর সাহায্যে ভিন্ন মাধ্যম অথবা ভিন্ন কাঠামো বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করা যায়। এটি একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এটি অনেকটা সুইচ বা হাব এর মতো। এক্ষেত্রে পার্থক্য হলো, হাব বা সুইচ একই নেটওয়ার্কের বিভিন্ন নোডকে সংযুক্ত করে অন্যদিকে ব্রিজ একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে।
ব্রিজের সুবিধাঃ
১। ভিন্ন মাধ্যম বিশিষ্ট অথবা ভিন্ন কাঠামো বা টপলোজি বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে পারে।
ব্রিজের অসুবিধাঃ
১। ভিন্ন প্রোটকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করতে পারে না।
গেটওয়ে একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে WAN ডিভাইসও বলা হয়। এটি ভিন্ন প্রটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ককে(LAN,MAN,WAN) সংযুক্ত করে WAN তৈরি করে। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করার সময় গেটওয়ে প্রটোকল ট্রান্সলেশন করে থাকে। বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস যেমন – হাব, সুইচ এবং রাউটার ইত্যাদি ডিভাইসসমূহ প্রোটোকল ট্রান্সলেশনের সুবিধা দেয় না।
গেটওয়ের সুবিধা
১। রাউটারের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং ডেটার কলিশন বা সংঘর্ষ কম।
২। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করতে পারে।
৩। ডেটা ফিল্টারিং করতে পারে।
গেটওয়ের অসুবিধা
১। অন্যান্য ডিভাইসের চেয়ে ব্যয়বহুল।
৩। কনফিগারেশন করা তুলনামূলক জটিল।
দূরত্ব বেশি হলে ক্যাবলে প্রবাহিত সিগন্যাল দূর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য প্রবাহিত সিগন্যালকে পুনরায় শক্তিশালী এবং আরো অধিক দূরত্বে অতিক্রম করার জন্য যে ডিভাইস ব্যবহৃত তাকে রিপিটার বলে।
রাউটার হচ্ছে একটি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস, যার সাহায্যে একই প্রোটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক স্বতন্ত্র নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা যায়। এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডেটা পাঠানোর পদ্ধতিকে বলে রাউটিং। যে ডিভাইস রাউটিং-এর কাজে ব্যবহৃত হয় তাকেই রাউটার বলে। ভিন্ন ভিন্ন নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এটি LAN, MAN এবং WAN এ তিন ধরনের নেটওয়ার্কেই কাজ করে। রাউটারের মধ্যে ইন্টেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা দেওয়া থাকে যা এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ডেটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততম পথ খুঁজে বের করে। ভিন্ন ধরনের টপোলজির নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হতে পারে। সিসকো সিস্টেমস-এর রাউটার বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত হয়।
নেটওয়ার্ক টপোলজি বলতে আমরা সাধারণত বুঝি, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো কীভাবে অপর কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর সাথে সংযুক্ত হয়ে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে, তার পরিকল্পনা বা ধারণা। এতে নেটওয়ার্কে ডেটা আদান-প্রদান সহজসাধ্য এবং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যবস্থাপনার কৌশল প্রয়োগ করা। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিগুলোর ভৌত সংযোগ বিন্যাস এবং নির্বিঘ্নে ডেটা আদান-প্রদানের যুক্তিনির্ভর সুনিয়ন্ত্রিত পথের পরিকল্পনা, এ দুইয়ের সমন্বিত ধারণাই নেটওয়ার্ক টপোলজি। একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি থাকতে পারে। নেটওয়ার্কে সংযুক্ত প্রতিটি যন্ত্রের (কম্পিউটার, খ্রিস্টার ও অন্যান্য পেরিফেরাল যন্ত্র) সংযোগস্থলকে সাধারণভাবে নোড (Node) নামে অভিহিত করা হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাধারণত নিচে উল্লিখিত টপোলজিগুলো ব্যবহার করা হয়।
১. ৰাস টপোলজি (Bus Topology)
২. রিং টপোলজি (Ring Topology)
৩. স্টার টপোলজি (Star Topology)
৪. ট্রি টপোলজি (Tree Topology)
৫. মেশ টপোলজি (Mesh Topology)
৬. হাইব্রিড টপোলজি (Hybrid Topology)
ৰাস টপোলজি (Bus Topology)
এ ধরনের টপোলজিতে একটি সংযোগ লাইনের সাথে সবধরনের নোড অর্থাৎ কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বা ডিভাইস ইত্যাদি সংযুক্ত থাকে। এই প্রধান সংযোগ লাইনকে বাস (Bus) বলা হয়, যা কো-এক্সিয়াল অথবা ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে তৈরি হয়। এটি নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে কাজ করে। এর লাইনের দু প্রান্তে দুটি টার্মিনেটর থাকে।
নেটওয়ার্কের প্রতিটি নোড স্বতন্ত্রভাবে বাসে সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহ ব্যবস্থা হয় দ্বিমুখী। ডেটা পাঠানোর প্রয়োজন হলে প্রেরক কম্পিউটার এ লাইনে ডেটা পাঠিয়ে দেয়। প্রেরিত ডেটার সাথে প্রাপক শনাক্তের তথ্যও থাকে। বাসের সাথে যুক্ত অন্যান্য প্রতিটি কম্পিউটার বাসে প্রবাহিত ডেটা পরীক্ষা করে দেখে। শুধু প্ৰাণক কম্পিউটারই ডেটা গ্রহণ করে, অন্যগুলো এই ডেটা গ্রহণ থেকে বিরত থাকে।
বাস টপোলজির সুবিধা
১. কম তার এবং সরল সংগঠনের কারণে বাস টপোলজি ইনস্টলেশন সহজ ও সাশ্রয়ী।
২. কানেক্টর বা রিপিটার দ্বারা সহজেই নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন বাস এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে
নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ ঘটানো যায়।
৩. নেটওয়ার্কে যে কোনো সময়ে নতুন নতুন ডিভাইস বা কম্পিউটার সংযুক্ত করা যায়।
৪. কোনো কম্পিউটার বিচ্ছিন্নকরণ বা নষ্ট হলেও সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে না।
৫. নেটওয়ার্কে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
বাস টপোলজির অসুবিধা
১. ডেটা ট্রান্সমিশন অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. প্রধান সংযোগ লাইন বা ৰাস-এ ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে।
৩. নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা এবং দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে ব্যাপক ট্রাফিক সুষ্টি হয় এবং গতি হ্রাস পায়।
8. ডেটা সংঘর্ষ হওয়ার আশা থাকে।
রিং টপোলজি (Ring Topology)
যে টপোলজিতে রিং -এর ন্যায় কম্পিউটার নৌछগুলো চক্রাকার পথে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে নেটওয়ার্ক গঠন করে তাকে রিং টপোলজি বলে। এই বৃত্তাকার নেটওয়ার্কে প্রথম ও সর্বশেষ কম্পিউটার পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে এবং এতে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
নেটওয়ার্কে যুক্ত প্রতিটি কম্পিউটার ডেটা প্রেরণের জন্য সমান অধিকার পায়। একটি নোঙ্ক সংকেত পাঠালে তা পরবর্তী নোডের কাছে যায়। সংকেতটি ঐ নোডের জন্য হলে সেটি সে নিজে গ্রহণ করে, অন্যথায় উরু নোড সংকেতকে তার পরবর্তী নোডের কাছে প্রেরণ করে। সঠিক নোডে না পৌছানো পর্যন্ত বৃত্তাকার নেটওয়ার্ক পথে সংকেত পরিভ্রমণ করে এবং এক পর্যায়ে তার কাঙ্ক্ষিত নোতে পৌঁছে যায়।
রিং টপোলজির সুবিধা
১. এই টপোলজিতে হোস্ট কম্পিউটার বা কেন্দ্রীয় সার্ভারের দরকার হয় না।
২. সংকেত প্রবাহ একমুখী হওয়ায় যেটা কলিশন বা সংঘর্ষ হয় না ।
৩. প্রতিটি কম্পিউটার ডেটা ট্রান্সমিশনে সমান গুরুত্ব পায়।
৪. ভারের পরিমাণ কম প্রয়োজন হয়, তাই বাস্তবায়ন খরচ কম।
রিং টপোলজির অসুবিধা
১. এই টপোলজিতে সংকেত আদান-প্রদান অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. একমুখী বৃত্তাকার পথে সংযুক্তির কারণে একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারকে সরাসরি যেটা
প্রেরণ করতে সমর্থ হয় না এবং কোনো নোত অকার্যকর হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে
৩. কোনো নতুন কম্পিউটার সংযোজন বা বিয়োজনে পুরো নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
৪. নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যা বাড়ালে ডেটা ট্রান্সমিশনের সময়ও বেড়ে যায়।
৫. এই টপোলজি নিহ্মাণের জন্য টি সফটওয়্যারের দরকার হয়।
ট্রি টপোলজি (Tree Topology)
ট্রি টপোলজিতে কম্পিউটার বা নোডগুলো পরস্পরের সাথে গাছের শাখা-প্রশামার ন্যায় বিন্যস্ত ও যুক্ত থাকে। এতে একাধিক স্তরের কম্পিউটার একটি কেন্দ্রীয় হোস্ট কম্পিউটার বা সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকে। এই হোস্ট কম্পিউটারের সাথে স্তর বিন্যাস বা হায়ারারকি (Hierarchy) অনুসারে বিভিন্ন স্তরের ডিভাইস নেটওয়ার্ক হবি বা সুইচের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এজন্য এটিকে হায়ারারকিক্যাল টপোলজিও বলা হয়। এ ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি ঘরের কম্পিউটার তার পরবর্তী স্তরের কম্পিউটারের জন্য অন্তবর্তী হোস্ট কম্পিউটার হিসেবে কাজ করে। যে কম্পিউটারের পরে আর কোনো কম্পিউটার যুক্ত হয় না সেই কম্পিউটারকে পেরিফেরাল টার্মিনাল বা প্রাতীয় কম্পিউটার বলে। ট্রি টপোলজির নেটওয়ার্ক সহজেই সম্প্রসারণ করা যায়। এক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহ হয় দ্বিমুখী।
ট্রি টপোলজির সুবিধা
১. যে কোনো সময়ে নতুন শাখা সৃষ্টি করে এর নেটওয়ার্ক সহজেই সম্প্রসারিত করা যায়।
২. বড় ধরনের নেটওয়ার্ক গঠনে অন্যান্য টপোলজির তুলনায় এটি বেশি সুবিধা প্রদান করে।
৩. কোনো নোড বিচ্ছিন্ন বা নতুন নোড যুক্ত করা হলে নেটওয়ার্ক কার্যক্রম ব্যাহত হয় না।
৪. ডেটা নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি।
৫. নেটওয়ার্কের কোনো শাখা নষ্ট হলে, সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে না।
ট্রি টপোলজির অসুবিধা
১. প্রধান কম্পিউটার নষ্ট হলে সমগ্র নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে।
২. অন্যান্য টপোলজির তুলনায় জটিল প্রকৃতির।
৩. ৰাস্তবায়ন ব্যয় অপেক্ষাকৃত বেশি।
৪. অন্তর্বর্তী কম্পিউটারগুলো অচল হলে নেটওয়ার্কের অংশবিশেষ অকেজো হয়ে পড়ে।
মেশ টপোলজি (Mesh Topology): যে টপোলজিতে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কভুক্ত অন্য প্রতিটি কম্পিউটারের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে তাকে মেশ টপোলজি বলা হয়। এতে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলোর সাথে সরাসরি অপেক্ষাকৃত দ্রুত ডেটা আদান-প্রদান করতে পারে। এতে কেন্দ্রীয় সার্ভার বা ডিভাইসের দরকার পড়ে না। এই নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট (পিয়ার-টু-পিয়ার) লিংক বলা হয়। এটি সম্পূৰ্ণৰূপে আন্তঃসংযুক্ত (Completely interconnected) টপোলজি নামেও পরিচিত। প্রচুর পরিমাণ ভারের প্রয়োজন এবং বেশি কম্পিউটার ব্যবহৃত হওয়ায় এই টপোলজি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এর জটিল কনফিগারেশনের জন্য কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাধারণত এটি ব্যবহার করা হয় না।
এই টপোলজিকে n সংখ্যক নোডের জন্য প্রতিটি নোডে (n-1) টি সংযোগের প্রয়োজন হয়। নেটওয়ার্কে মোট n(n-1) তারের সংখ্যা হবে । ডেটা যোগাযোগের নির্ভরশীলতাই যেখানে মুখ্য, সেসব ক্ষেত্রে মেশ টপোলজি ব্যবহার করা হয়। যেমন- প্রতিরক্ষা বা ব্যাংকিং -এর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে।
মেশ টপোলজির সুবিধা
১. অন্যান্য সব ধরনের টপোলজির তুলনায় এতে ডেটা ট্রান্সমিশন দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়।
২. নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি কমে না ।
৩. নেটওয়ার্কস্থ যেকোনো কম্পিউটার নষ্ট বা বিচ্ছিন্ন হলেও নেটওয়ার্ক সচল থাকে।
৪. কোনো সংযোগ ভার নষ্ট বা বিচ্ছিন্ন হলে বিকল্প সকল কম্পিউটারে ডেটা আদান-প্রদান অব্যাহত থাকে।
৫. নেটওয়ার্কে কেন্দ্রীয় কোনো ডিভাইস বা সার্ভারের প্রয়োজন হয় না।
মেশ টপোলজির অসুবিধা
১. বেশি পরিমাণ তার ও অতিরিক্ত লিংক প্রয়োজন হওয়ায় এটি ব্যয়বহুল।
২. নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন অত্যন্ত জটিল।
৩. নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যাবৃদ্ধির সাথে সাথে স্বপ্নের পরিমাণও বেড়ে যায়।
হাইব্রিড টপোলজি (Hybrid Topology)
স্টার, রিং, বাস, মেশ প্রভৃতি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে হাইব্রিড টপোলজি বলে। বিশেষ কোনো কাজের ক্ষেত্রে একটিমাত্র টপোলজি স্বয়ংসম্পূর্ণ না-ও হতে পারে।
এজন্য এসব ক্ষেত্রে হাইব্রিড টপোলজি ব্যবহৃত হয়। হাইব্রিড টপোলজির উপর ভিত্তি করে ইন্টারনেট গঠন করা হয়েছে। কেননা এতে প্রায় সব ধরনের টপোলজির নেটওয়ার্কই সংযুক্ত আছে। হাইব্রিড নেটওয়ার্কের সুবিধা ও অসুবিধা নির্ভর করে ঐ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত টপোলজির উপর।
হাইব্রিড টপোলজির সুবিধা
১. এতে ছাৰ বা সুইচ যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যায়।
২. এই নেটওয়ার্কের ট্রাবল শ্যুটিং সহজতর ।
৩. একটি টপোলজি নষ্ট হলে অন্য কোনো টপোলজির উপর প্রভাব পড়ে না।
৪. যেহেতু এটি মিশ্র টপোলজি তাই এতে ব্যবহৃত টপোলজিগুলোর সুবিধাগুলোও এতে অন্তর্নিহিত
থাকে।
হাইব্রিড টপোলজির অসুবিধা
১. টপোলজির সংখ্যা বেশির কারণে এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া জটিল
২. এই টপোলজির ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন বেশ জটিল প্রকৃতির।
৩. মিশ্র টপোলজি হিসেবে এতে ব্যবহৃত টপোলজিগুলোর অসুবিধাগুলোও এতে অন্তর্নিহিত থাকে।
স্টার টপোলজি (Star Topology)
যে টপোলজিতে কম্পিউটার বা বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন- প্রিন্টার, সরাসরি একটি হাব বা সুইচের মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে তাকে স্টার টপোলজি বলে। এ পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো এই হাব বা সুইচের মাধ্যমে একটি অন্যটির সাথে যোগাযোগ ও ডেটা আদান-প্রদান করে। ফলে সংকেত আদান-প্রদানে কম সময় প্রয়োজন হয় এবং সংকেত সংঘর্ষের আশঙ্কা কম থাকে। সংকেত প্রবাহ দ্বিমুখী হয়। হাব বা সুইচ বা সার্ভার দিয়ে কেন্দ্ৰীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত স্টার টপোলজির নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা শনাক্ত করা সহজ হয়। সাধারণত এই টপোলজিতে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা গেলেও টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল ব্যবহারের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়।
স্টার টপোলজির সুবিধা
১. অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে ডেটা আদান-প্রদান হয়।
২. সংকেত সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা কমায়।
৩. সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সচল রেখেই যে কোনো সময়ে নেটওয়ার্কে নতুন নোড যুক্ত করা যায়।
৪. কোনো নোড বিচ্ছিন্ন বা অচল হলেও নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ সচল থাকে।
৫. সুইচ ব্যবহারের কারণে বাস বা রিং টপোলজির তুলনায় এর ডেটা নিরাপত্তা বেশি।
৬. কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ডেটা ট্রান্সমিশনের পতি স্বাভাবিক থাকে।
স্টার টপোলজির অনুবিধা
১. হাব বা সুইচ বা সার্ভার অচল হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে পড়ে।
২. প্রতিটি নোডের জন্য পৃথক পৃথক তারের প্রয়োজন হয় তাই এতে অপেক্ষাকৃত বাস্তবায়ন ব্যয় বেশি।
৩. নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো পরস্পরের মধ্যে সরাসরি তথ্য বা ডেটা আদান-প্রদানে সক্ষম হয় না।
ইন্ট্রানেট: Intranet (ইন্ট্রানেট) একটি তথ্য পোর্টাল যা বিশেষভাবে ছোট এবং মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ডিজাইন করা হয় । Intranet (ইন্ট্রানেট) হচ্ছে প্রাইভেট নেটওয়ার্কিং সিস্টেম । এটি সাধারণত কোন প্রতিষ্ঠানের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম । এটি অনেকগুলো লোকাল নেটওয়ার্ক এর সংযোগে গঠিত । এটি WAN বা Wide Area Network এর মাধ্যমে নিজেদের নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকে। এটি একটি প্রতিষ্ঠান দ্বারা সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এবং সুরক্ষিত থাকে ।
Server হল একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম Haridwar বা software ডিভাইস যা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে। এটি ইন্টারনেটে local area network (LAN) বা wide area network (WAN) এর মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করে।
সার্ভার এর প্রধান কাজ হলো ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী deta বা তথ্য প্রদান করা অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যে তথ্য জানতে চাই সেই গুলো সঠিকভাবে প্রদান করা । যেমন আমরা কোন ব্রাউজারে গিয়ে কোন কিছু লিখে যখন সার্চ করি তারপর আমরা যে রেজাল্টটা দেখতে পাই সেটা কিন্তু সার্ভার আমাদেরকে প্রদান করে।
Computer networking এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন আলাদা আলাদা রকমের server থাকতেই পারে।
১. ফাইল সার্ভার (File server)
ফাইল সার্ভার হলো এমন একটি সার্ভার / কম্পিউটার যেখানে বিভিন্ন ধরণের ডাটা (data) ফাইল (files) গুলোকে স্টোর এবং ম্যানেজ করা হয়।
২. ডাটাবেস সার্ভার (Database server)
এটা এমন একটি কম্পিউটার সিস্টেম যার কাজ হলো database থেকে data গুলোকে access করা এবং সেগুলোকে আবার গ্রহণ করার সাথে জড়িত সেবা প্রদান করা।
৩. ওয়েব সার্ভার (Web Server)
একটি ওয়েব সার্ভার হলো একটি server software বা hardware যেটা বিভিন্ন websites গুলোকে চালিয়ে (run) থাকে।
৪. Application server
Application server গুলোকে মূলত তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন application গুলোকে run করার উদ্দেশ্যে।
৫. Proxy server
Proxy server হলো একটি server application বা application যেটা user request এবং request এর সাথে জড়িত সার্ভারের মধ্যে একটি মধ্যস্থতাকারী ( intermediary ) হিসেবে কাজ করে।
৬. Mail Server
Mail server বা e-mail server হলো এমন এক ধরণের সার্ভার এর প্রকার যেটা নেটওয়ার্ক এর ওপরে email গুলোকে গ্রহণ এবং ডেলিভার করে থাকে।
৭. FTP server
ইন্টারনেটে প্রত্যেক দিন প্রায় প্রচুর files গুলো একটি কম্পিউটার থেকে আরেকটি কম্পিউটারের মধ্যে ট্রান্সফার (transfer) করা হয়।
ভিপিএন এর পূর্ণরূপ হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। এটি ইন্টারনেটে আপনার ও অন্য একটি নেটওয়ার্কের মাঝে সিকিউর কানেকশন তৈরী করে দেয়। অধিকাংশ মানুষ মূলত অঞ্চলভিত্তিক ব্লক করা সাইটগুলোতে প্রবেশ করতে, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এবং সেনসিটিভ কন্টেন্ট ব্রাউজ করার সময় নিজেকে ট্রেস করা থেকে বাঁচাতেই ভিপিএন ব্যবহার করে।
আজকাল ভিপিএন এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু অনেকেই আজ যে কারণে ভিপিএন ব্যবহার করে সেই কারণে ভিপিএন এর জন্ম হয়নি। ভিপিএন তৈরী করা হয়েছিল ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলোকে নিরাপদে সংযুক্ত করার জন্য।
ভিপিএন আপনার নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে অন্য কোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফরোয়ার্ড করে দেয়। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমেই বিল্ট ইন VPN সাপোর্ট আছে।
Read more