যে অ্যালজেবরায় ব্যবহৃত চলকের শুধুমাত্র দুটি মান সত্য এবং মিথ্যা হতে পারে তাকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা(Boolean algebra) বলে।
প্রখ্যাত ইংরেজ গণিতবিদ জর্জ বুল 1847 সালে তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ “The mathematical analysis of logic ” এ সর্বপ্রথম বুলিয়ান অ্যালজেবরা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি সর্বপ্রথম গণিত ও যুক্তির মধ্যে সম্পর্ক আবিষ্কার করেন এবং গণিত ও যুক্তির উপর ভিত্তি করে এক ধরনের অ্যালজেবরা তৈরি করেন। একেই আমরা বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলি।
বুলিয়ান অ্যালজেবরায় কোনো ধরনের ভগ্নাংশ, লগারিদম, বর্গ, ঋণাত্মক সংখ্যা, কাল্পনিক সংখ্যা ইত্যাদি ব্যবহার করা যায় না। শুধু তা-ই না, এখানে কোনো ধরনের জ্যামিতিক বা ত্রিকোণমিতিক সূত্র ব্যবহার করা যায় না। বুলিয়ান অ্যালজেবরায় শুধু মাত্র যৌক্তিক যোগ, গুণ ও পূরকের মাধ্যমে সমস্ত গাণিতিক কাজ করা হয়।
বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যে রাশির মান পরিবর্তনশীল তাকে বুলিয়ান চলক বলে। যেমন- C = A + B, এখানে A ও B হচ্ছে বুলিয়ান চলক। আর যে রাশির মান অপরিবর্তনশীল থাকে তাকে বুলিয়ান ধ্রুবক বলে। এই অ্যালজেবরায় যেকোনো চলকের মান ০ অথবা ১ হয়। এই ০ এবং ১ কে একটি অপরটির বুলিয়ান পূরক বলা হয়। বুলিয়ান পূরকে ‘–’ চিহ্নের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। গণিতের ভাষায় লেখা হয় A এর পূরক A′।
A
B
AB
I
যে সকল টেবিল বা সারণির মাধ্যমে বিভিন্ন গেইটের ফলাফল প্রকাশ করা হয় অর্থাৎ লজিক সার্কিটের ইনপুটের উপর আউটপুটের ফলাফল প্রকাশ করা হয় তাই সত্যক সারণি।
বুলিয়ান অ্যালজেবরা (Boolean Algebra): শুধু ০ এবং ১ এ দুটি বাইনারি সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে অন্য সকল প্রকার সংখ্যার প্রদর্শন ও হিসাবনিকাশের বীজগণিতীয় পদ্ধতিকে বুলিয়ান আলজেবরা বলে। বুলিয়ান অ্যালজেবরায় প্রতিটি চলকের মান কেবল ০ কিংবা ১ হতে পারে। কোনাে চলকের মান সত্য হলে ১ এবং মিথ্যা হলে ০ ধরা হয়। লজিক গেইট বা যুক্তি বর্তনীর। উচ্চ ভােল্টেজ ১ এবং নিম্ন ভােল্টেজ ০ ধরা হয়।
উলেখ্য, বুলিয়ান অ্যালজেবরা লজিক সার্কিড ডিজাইনের জন্য ব্যবহৃত হয়। জর্জবল ১৮৫৪ সালে গণিত এবং যুক্তির মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে তা সনাক্ত করতে সক্ষম হন। তার এই বীজগণিতই বুলিয়ান অ্যালজেবরা নামে পরিচিত।
লজিক গেট (Logic Gate): লজিক বা যৌক্তিক গেট হলাে এক ধরনের ডিজিটাল ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা বুলিয়ান এলজেবরা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের যৌক্তিক অপারেশন বা লজিক অপারেশন করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের লজিক গেটের মধ্যে মৌলিক গেট হলাে- AND গেট, OR গেট এবং NOT গেট। এসব গেট ব্যবহার করে অন্যান্য যৌক্তিক গেট তৈরি করা যায়।
মৌলিক গেট |
যৌগিক গেট |
AND, OR এবং NOT |
NAND গেট, NOR গেট, XOR গেট, এবং XNOR গেট |
গেট (Gate) |
বৈশিষ্ট্য |
||||||||||||||||||
OR গেট |
দুই বা ততােধিক ইনপুট এবং একটি মাত্র। আউটপুট থাকে। এখানে আউটপুট ইনপুট
অর গেটের সত্যক সারণি |
||||||||||||||||||
AND গেট |
দুই বা ততােধিক ইনপুট এবং একটি মাত্র । আউটপুট থাকে। এখানে আউটপুট ইনপুটগুলাে। যৌক্তিক গুণফলের সমান। সবগুলাে ইনপুট ১ হলে আউটপুট ১ হয়।। যেকোন একটি ০ হলে আউটপুট ০ হয়।
অ্যান্ড গেটের সত্যক সারণি |
||||||||||||||||||
NOT গেট |
একটি মাত্র ইনপুট এবং একটি মাত্র আউটপুট থাকে। এটি এমন একটি গেট যা আউটপুট, ইনপুটের বিপরীত মান।
নট গেটের সত্যক সারণি |
||||||||||||||||||
NOR গেট |
OR গেট ও NOT গেট এর সমন্বিত গেটকে নর গেট বলে। |
||||||||||||||||||
NAND গেট |
AND গেট ও NOT গেট এর সমন্বিত গেট হল ন্যান্ড গেট। |
||||||||||||||||||
XOR গেট |
Exclusive ORএর সংক্ষিপ্ত রূপ হলাে XOR। XOR গেট মৌলিক গেট দিয়ে তৈরি করা হয়। |
||||||||||||||||||
XNOR গেট |
XOR গেট ও NOT গেট এর সমন্বিত গেটের নাম XNOR। |
অ্যাডার হচ্ছে এমন একটি সমবায় সার্কিট (Combination Circuit) যার সাহায্যে বাইনারি সংখ্যা যোগ করা যায়। যেহেতু কম্পিউটারের যাবতীয় গাণিতিক কাজ বাইনারি যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় তাই অ্যাডার একটি গুরুত্বপূর্ণ সার্কিট।
অ্যাডার দুই প্রকার। যথা–
১. অর্ধযোগের বর্তনী বা হাফ-অ্যাডার : দুই বিট যোগ করার জন্য যে সমন্বিত বর্তনী ব্যবহৃত হয় তাকে হাফ-অ্যাডার বলে।
২. পূর্ণ যোগের বর্তনী বা ফুল-অ্যাডার : দুই বিট যোগ করার পাশাপাশি যে সমন্বিত বর্তনী ক্যারি বিট যোগ করে তাকে ফুল-অ্যাডার বলে।
এনকোডার এর মাধ্যমে মানুষের বোধগম্য ভাষাকে কম্পিউটারের বোধগম্য অর্থাৎ যান্ত্রিক ভাষায় রূপান্তর করে।
কিন্তু কম্পিউটারের বোধগম্য অর্থাৎ যান্ত্রিক ভাষা যদি মনিটরের পর্দায় প্রদর্শিত হয় তাহলে মানুষ যান্ত্রিক ভাষা বুঝতে পারবেনা।
আর এই যান্ত্রিক ভাষাকে মানুষের বোধগম্য ভাষায় রূপান্তরের কাজটিই ডিকোডার করে থাকে।
ফ্লিপ ফ্লপ হচ্ছে একটি মেমরি উপাদান যা ১ বিট তথ্য ধারন করতে পারে। এটি মূলত লজিক গেইট দ্বারা তৈরি।।
রেজিস্টর হলো একটি ইলেক্ট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট বা উপাদান যা বৈদ্যুতিক সার্কিট এ বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করে। বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তে কারেন্ট প্রবাহকে বাধা দেয়ার কাজে যে উপাদান বা কম্পোনেন্ট ব্যবহৃত হয় তাকে রেসিস্টর(Resistor) বলে।
কাউন্টার হলো এমন একটি সিকুয়েন্সিয়াল ডিজিটাল ইলেকট্রনিক সার্কিট, যা তার ইনপুটে দেয়া পালসের সংখ্যা গণনা করতে পারে। কিছু সংখ্যক ফ্লিপ ফ্লপ একসাথে সংযুক্ত করে কাউন্টার তৈরি করা হয়। কাউন্টার দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা গণনা করা হয়।
Read more